রাজধানীর দক্ষিণখান চালাবন্দে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে তিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পানি বন্দি থাকলেও এ অবস্থা উত্তরণে সমাধানে উদ্যোগ নিচ্ছে না কমিটি এমনটি অভিযোগ স্থানীয়দের। একই স্থানে দুটি ভবনে চালাবন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চালাবন্দ শিশু কল্যান প্রাথমিক বিদ্যালয়-২০০ ও হাজী কফিল উদ্দিন মুন্সি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের কার্যক্রম চল্লেও শ্রেণি কক্ষে পানি উঠে যাওয়ার কারনে পাঠ্যদান কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে এমনটি জানা যায়।
মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাজী কফিল উদ্দিন মুন্সি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের নিজস্ব ভবন থাকলেও চালাবন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চালাবন্দ শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি মাত্র ভবন। দুই তলা বিশিষ্ট একটি ভবনে নিচে উপরে মিলে মোট ছয়টি কক্ষ রয়েছে। তার মধ্যে নিচের তিন টি কক্ষ পানি বন্দি হওয়ায়। শুধু মাত্র উপরের তিনটি কক্ষে পাঠ্যদান কার্যক্রম চালাতে দেখা যায় দুটি বিদ্যালয়ের।
তিনটি প্রতিষ্টানে খাবার পানির ব্যবস্থা না থাকার কথাও জানালেন সেখানকার কর্তব্যরত শিক্ষক। চালাবন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সারোয়ার আলম জানান, মসজিদ থেকে খাবার পানি এনে খাওয়া হয়।দুই কাউন্সিলর মোতালেব মিয়া ও ইলোরা পারভীন কে জানানো হয়েছে কিন্তু কেউ পাত্তা দেয় নি। এর বেশি কিছু বলতে আমার নিষেদ আছে।
তিন কক্ষ দিয়েই চলছে দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠ্যদান। তার মধ্যে দুই কক্ষে শিক্ষা কার্যক্রম চল্লেও এক কক্ষ অফিস কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
শিক্ষিকামন্ডলী জানান, প্রায় একবছর যাবত এই সমস্যা কিন্তু বর্ষা মৌসুম থেকে পানি বেশি হওয়ায় নিচের রুম গুলোতে পাঠ্যদান সম্ভব হচ্ছে না। যে কারণে আমাদের দোতলার তিনটি কক্ষ দিয়েই দুটি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। আশ পাশের সব বাড়িঘর উচু এবং বিদ্যালয়টি নিচু হওয়ায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলেও জানান। পানি নিষ্কাশনের কোন উদ্যোগ কেউ নিয়েছে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষিকামন্ডলী জানান, আমরা শিক্ষা অফিসার কে জানিয়েছি। এবিষয়ে মিটিংও হয়েছে । তবে দেখেও না দেখার ভান করছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কমিটির সভাপতি মোঃ খায়রুল আলম লিটন। লিটন সভাপতির দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকে কোন উন্নয়ন মুলক কাজ করতে দেখা যায় নি বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের। এবিষয়ে খায়রুল আলম লিটনের সাথে কথা হলে তিনি জানান,আমি যা পারছি করছি। কিন্তু জায়গার দাতা সদস্য কিছু না করলে আমি কি করবো? জমির দাতা সদস্য ও চালাবন্দ শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি আমিনুল ইসলাম আমিন জানান, আমি সমস্যাটা নিয়ে স্থানীয় সাংসদকে জানিয়েছি, তিনি আশ্বাস দিয়েছেন কিন্তু কোন অগ্রগতি হয়নি। আমি ব্যাক্তিগত উদ্যোগে তিন লক্ষ টাকার মাটি ফেলেছি।
এর আগে স্কুল মাঠে গভীর গর্ত ছিল । সে গর্ত ভরাট করার ব্যাপারে ততকালিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী এ্যাডঃ সাহারা খাতুন এমপি’র সহযোগীতা নিয়ে করেছিলাম।
স্কুল সড়কের পাশের এক দোকানদার মো: সুজন জানান,পানি নিষ্কাশনের কোন উদ্যোগ কাউকে নিতে দেখা যায় নি এখনো পর্যন্ত। সুজন জানান, দীর্ঘদিন যাবত এই অবস্থা, কেউ কোন উদ্যোগ নেন না। পাশেই সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর ইলোরা পারভীন এর বাড়ি তার পরেও বিষয়টা দেখেন না। রাস্তার পানির সাথে পাশের ব্রয়লার মুরগির উচ্ছিষ্ট যুক্ত হয়ে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়। অনেক সময় বাচ্চারা স্কুলের ভেতর ঢুকতে গেলে ড্রেনে পা ঢুকে যায়। ব্যথা পেতে দেখা যায় প্রাই। কারন পানির নিচে কি আছে দেখা যায় না। এছাড়াও রাস্তার পানি দোকানের ভেতর উঠে আসে।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৪৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ মোতালেব মিয়া জানান, বিষয়টা আমি জানি। এটা আমার একার কাজ না। দুই তিন মাসের মধ্যে আশা করি সমাধান হবে।