ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কে ইট বোঝাই ট্রাকের ধাক্কায় এক ব্যবসায়ীর মৃত্যুতে স্থানীয় উৎসুক জনতা এই মহাসড়ক তিন ঘন্টা অবরোধ করে রাখে। ফলে সড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হলে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ। পরে আশুলিয়া থানা এবং হাইওয়ে থানার পুলিশ এসে অবরোধকারীদের বুঝিয়ে মহাসড়কে যান চলাচল নির্বিঘ্ন করে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে আশুলিয়ার পলাশবাড়ী এলাকায় স্কাইলাইন গ্রুপের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত লিটন শেখ (২৫) জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ থানার নলছিয়া এলাকার জলিল শেখের ছেলে। তিনি তার পরিবার নিয়ে আশুলিয়ায় ভাড়া বাসায় থেকে ভাঙ্গারি মালের ব্যবসা করতেন বলে জানা গেছে। স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, লিটন শেখ নামের এক ব্যক্তি বৃহস্পতিবার সকাল আনুমানিক ১১টার দিকে অটোরিকশা যোগে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক দিয়ে বাইপাইল যাওয়ার সময় পলাশবাড়ী এলাকায় আসলে ইট বোঝাই একটি ট্রাক (জামালপুর -ট-৫৮) তাকে ধাক্কা দেয়। এ সময় অটোরিকশায় থাকা এক শিশুসহ তিনজন গুরুতর আহত হয়। এ সময় ঘটনাস্থলেই লিটনের মৃত্যু হয়। পরে আহত দুইজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদেরকে ছেড়ে দেন। এদিকে ঘটনাস্থল থেকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অটোরিকশাটি ঢাকা-চন্দ্রা মহাসড়কের উল্টো দিক থেকে আসছিল। এসময় সামনের দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সাথে তাদের ধাক্কা লাগে। পরে ট্রাকটি দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার সময় পলাশবাড়ী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আরও এক মোটরসাইকেল চালককে ধাক্কা দেয়। তখন স্থানীয় জনতা ট্রাকটি আটক করে ভাংচুর করে। সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। সেই সাথে ঘটনার সাথে জড়িত ঘাতক ট্রাকটি জব্দ ও চালককে আটক করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, মহাসড়কে থ্রি-হুইলার চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও ঢাকা-আরিচা এবং ঢাকা-চন্দ্রা মহাসড়কের থ্রি-হুইলার দাপটের সাথে চলাচল করছে। আর এই চলাচল করার ক্ষেত্রে এরা মানছে না কোনো আইনকানুন। সড়কের উভয়পাশ দিয়েই চলে এগুলো। এরফলে মহাসড়কে চলাচলকারী অন্যান্য দ্রুত গতির যানবাহন বিশেষ করে মোটরসাইকেলের আরোহীদের চলাচলে সবচেয়ে বেশী সমস্যা হয় এবং বেশী মৃত্যুঝুঁকিতে থাকেন তারাই। সম্প্রতি বেশকিছু মোটরসাইকেল আরোহী এই মহাসড়কে দুর্ঘটনায় পতিত হয়ে নিহত হয়েছেন। অথচ মহাসড়কে এই থ্রি-হুইলারের অবৈধ দাপট যারা রোধ করবে তারা এবিষয়ে সম্পূর্ণ নীরব ভূমিকা পালন করে চলেছেন। বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে আইনের রক্ষকদের থ্রি-হুইলার থেকে মাসিক মাসোহারা নেবার বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উর্ধতন কর্মকর্তাদের টনক নড়ছে না। যতদিন থ্রি-হুইলার মহাসড়কে চলাচল করবে, ততদিন এভাবে প্রাণহানির সংখ্যা বাড়তেই থাকবে। তাই হাইওয়ে থানা এবং প্রশাসনের এবিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন সচেতন সাভারবাসী।