বৈরী আবহাওয়ার কারণে দুর্ঘটনা এড়াতে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ রেখেছে টেকনাফ উপজেলা প্রশাসন। ফলে (শনিবার )সেন্টমার্টিনে ভ্রমণে আসা হাজারো পর্যটক ফিরতে পারবেন না। তাদের আরও একদিন দ্বীপে থাকতে হবে।
রোববার বেলা ১২টায় জাহাজ চলাচল বন্ধের বিষয়টি জানান টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুজামান। তিনি বলেন, বৈরী আবহাওয়ার ফলে সমুদ্র উত্তাল। তাই দুর্ঘটনা এড়াতে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী কোনো জাহাজ সেন্টমার্টিনে যেতে দেওয়া হয়নি। যেসব পর্যটক টিকিট কেটেছিলেন তাদের টাকা ফেরত দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইউএনও বলেন, ভ্রমণে আসা দ্বীপে অবস্থানকারী পর্যটকরা যাতে হয়রানির শিকার না হয় সেজন্য সেখানকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্তক থাকতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি সৈকতে পর্যটকদের না নামতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে আবার জাহাজ চলাচল শুরু হবে।
এদিকে রোববার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, ঝোড়ো হাওয়া ও বজ্রসহ বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর প্রভাবে ভোর থেকে টেকনাফে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিপাত হয় এবং আকাশ মেঘলা হয়ে আছে। এ কারণে জাহাজ চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় উপজেলা প্রশাসন।
জাহাজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বর্তমানে কক্সবাজার-টেকনাফ দমদমিয়া ঘাট থেকে প্রতিদিন ৬টি জাহাজে করে ২-৩ হাজারেরও বেশি পর্যটক সেন্টমার্টিনে বেড়াতে যান।
সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, ভ্রমণে আসা প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে হাজারো পর্যটক অবস্থান করছেন। তাদের সবার আজ ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় তাদের আজকেও দ্বীপে অবস্থান করতে হবে।
তিনি বলেন, তবে দ্বীপে আবহাওয়া স্বাভাবিক রয়েছে। তবুও পর্যটকরা যাতে সমুদ্রে গোসল করতে না নামেন, সে-বিষয়ে বিচ কর্মীদের মাধ্যমে পর্যটকদের সর্তক করা হচ্ছে।
সেন্টমার্টিনে ভ্রমণে আসা ঢাকার এক ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আজিজ বলেন, পরিবার নিয়ে দ্বীপে ভ্রমণে এসে আটকা পড়েছি। শুধু আমি নই, বেড়াতে এসে অনেকেই আটকা পড়েছেন। সমুদ্র উত্তালের কারণে আজ কোন জাহাজ দ্বীপে আসবে না বলে শুনেছি। ফলে আমাদের আরও একদিন দ্বীপে অবস্থান করতে হবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) টেকনাফ অঞ্চলের ট্রাফিক সুপারভাইজার জহির উদ্দিন ভূঁইয়া জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে দুর্ঘটনা এড়াতে এই রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
তিনি জানান, গতকাল (শনিবার) এই রুটে ৬টি জাহাজে করে হাজারের বেশি পর্যটক দ্বীপে ভ্রমণে আসে। তাদের আজকে ফেরা হবে না। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে ফের জাহাজ চলাচল শুরু হবে।
পর্যটকবাহী জাহাজ কেয়ারি সিন্দবাদের টেকনাফের ব্যবস্থাপক শাহ আলম বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে সমুদ্র উত্তাল থাকায় কোনো জাহাজ দ্বীপে যায়নি। দ্বীপে বেড়াতে এসে অনেক পর্যটক আটকা পড়েছেন। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে তাদের ফিরিয়ে আনা হবে।
দৈনিক নবচেতনার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন