জালিয়াতিতে অভিযুক্ত ভারতের আদানি পাওয়ারের সঙ্গে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চুক্তিকে অস্বচ্ছ ও বৈষম্যমূলক বলছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। উদ্বেগ প্রকাশ করে সংস্থাটি বলছে, ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেনার এ চুক্তি বাস্তবায়িত হলে বিতর্কিত কোম্পানিটির হাতে জিম্মি হয়ে পড়তে পারে দেশের বিদ্যুৎ খাত।
এ চুক্তির চূড়ান্ত বোঝা দেশের জনগণকে বইতে হবে মন্তব্য করে আজ শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতি দিয়েছে সংস্থাটি। বিবৃতিতে চুক্তির শর্তগুলোকে পুঙ্খানুপঙ্খ বিচার করে প্রয়োজনে সংশোধন বা বাতিলের পরামর্শ দিয়েছে তারা।
টিআইবি বলছে, গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী আদানি গ্রুপের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনতে দেশে উৎপাদিত বিদ্যুতের তুলনায় প্রায় তিনগুণ বেশি দাম দিতে হবে। বেশি দামে বিদ্যুৎ কেনার বাধ্যবাধকতার কথা উল্লেখ রয়েছে চুক্তিতে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, চুক্তিটিতে বাংলাদেশের স্বার্থকে উপেক্ষা করে আদানি গোষ্ঠীর স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। এর ফলে দেশের বিদ্যুৎ খাত এ প্রতিষ্ঠানের হাতে জিম্মি হয়ে পড়তে পারে।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সূত্রে প্রকাশিত তথ্য উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্রে যে কয়লা ব্যবহৃত হবে তা আদানির জাহাজে করে আসবে তারই মালিকানাধীন ইন্দোনেশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার বিতর্কিত খনি থেকে। ওই কয়লা খালাস হবে আদানির মালিকানাধীন বন্দরে এবং পরিবহন করা হবে আদানির মালিকানাধীন রেলে। এমনকি উৎপাদিত বিদ্যুৎ পরিবহন করা হবে আদানিরই নির্মিত সঞ্চালন লাইনে। তবে জ্বালানি খরচসহ এই পুরো প্রক্রিয়ার ব্যয় বইতে হবে বাংলাদেশকে, যা বৈশ্বিক বিদ্যুৎ খাতের অভিজ্ঞতায় অভূতপূর্ব। ফলে এ প্রকল্পে সরবরাহকৃত বিদ্যুতের মূল্য অন্য যে কোনো সরবরাহকারী থেকে প্রাপ্ত বিদ্যুতের তুলনায় অস্বাভাবিক বেশি হবে। এ বৈষম্যমূলক চুক্তির বোঝা জনগণের ওপর চাপিয়ে দেয়ার অধিকার কারো নেই।
ড. জামান বলেন, পিডিবি ও সরকারের সংশ্লিষ্ট নীতি নির্ধারকদের প্রতি আহ্বান, জরুরি ভিত্তিতে এই চুক্তির সব শর্ত বিশ্লেষণ করে সংশোধন করা হোক। জনগণের স্বার্থ প্রাধান্য দিয়ে প্রয়োজনে বাতিল করা হোক।