বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ মহামারির পরও ২০২০-২১ অর্থ বছরে ২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ও ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রাপ্ত রেমিটেন্স ২১ দশমিক শূন্য তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলার বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে প্রায় ১০ হাজার ৪৯৩ দশমিক ২৬ মিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছে।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় পার্টির এমপি রুস্তম আলী ফরাজীর এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য নিশ্চিত করেন প্রধানমন্ত্রী।
সংসদে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়ার জন্য সরকার নানামুখি পদক্ষেপ নিয়েছে। যার মধ্যে অধিক কর্মী পাঠান, বৈধভাবে ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিটেন্স পাঠান অন্যতম। আর বৈধপথে রেমিটেন্স পাঠানোর ক্ষেত্রে সরকার ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে দুই শতাংশ প্রণোদনা দিয়ে আসছে। সরকার ইতোমধ্যে প্রণোদনার বিষয়টি দুই শতাংশ থেকে আড়াই শতাংশে এ উন্নীত করেছে। সরকারের এসব পদক্ষেপের ফলে রেমিটেন্স প্রবাহ বেড়েছে।
তিনি আরো বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে রেমিট্যান্সের কোনো বিকল্প নেই এবং তা আনতে হবে বৈধ পথে। নতুন শ্রম বাজার অনুসন্ধান, বিদ্যমান বাজার সংহত করা ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে সম্ভাবনাময় দেশসমুহের সরকার ও ব্যবসায়ী সংগঠনের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনগুলো আলোচনা অব্যাহত রেখেছে।
২০২২ সালে বিদেশ গেছে ১১ লাখ ১৩ হাজার ৩৭৪
এমপি কাজিম উদ্দিন আহম্মেদের এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, সরকারের নেয়া বেশ কিছু পদক্ষেপের ফলে ২০২২ সালে রেকর্ড সংখ্যক প্রায় ১১ লাখ ১৩ হাজার ৩৭৪ কর্মীর বৈদেশিক কর্মসংস্থান হয়েছে। এর মধ্যে নারী কর্মীর সংখ্যা এক লাখ পাঁচ হাজার ৪৬৬ জন। এছাড়া, সরকারী রিক্রুটিং এজেন্সি (নিয়োগ সংস্থা) বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের (বোয়েসেল) মাধ্যমে ২০২২ সালে ৬১৫ জন পেশাজীবী ও ১৭ হাজার ৯৭৮ জন দক্ষ কর্মীসহ মোট ১৮ হাজার ৫৯৩ জন কর্মী বৈদেশিক কর্মসংস্থান লাভ করেছে।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে ১৬৮ টি দেশে শ্রমশক্তি রপ্তানি করা হচ্ছে। কিন্তু সরকার মধ্যপ্রাচ্যকেন্দ্রিক শ্রম বাজার নির্ভরতা কমাতে চায়। সেজন্য পূর্বইউরোপ ও পূর্ব এশিয়ার নতুন কিছু দেশে শ্রমিক রপ্তানি চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ২০১৮ সালের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রতি উপজেলা থেকে গড়ে বছরে এক হাজার কর্মী পাঠানোর জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
এমপি বেনজির আহমেদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে যেখানে মোট খাদ্যশস্য উৎপন্ন হতো তিন কোটি ২৮ লাখ ৯৬ হাজার মেট্রিক টন তা ২০২১-২২ অর্থবছরে তা বেড়ে দাড়িয়েছে চার কোটি ৫৮ লাখ ৯৬ হাজার মেট্রিক টন। বর্তমানে ৭০টির বেশি দেশে সবজি ও ফল রপ্তানী হচ্ছে এবং কৃষি পণ্য রপ্তানীতে আমরা ১০০ কোটি ডলারের মাইলফলক ছাড়িয়ে গেছে। তিনি বলেন, বর্তমান বাংলাদেশ বিশ্বে চাল উৎপাদনে তৃতীয় স্থানে, সবজি ও পেয়াজে তৃতীয় স্থান। পাট উৎপাদনে দ্বিতীয়, চা উৎপাদনে চতুর্থ এবং আলু ও আম উৎপাদনে সপ্তম স্থানে উন্নীত হয়েছে।