বিএনপির এমপিদের পদত্যাগে শূন্য হওয়া ছয় সংসদীয় আসনে ভোটগ্রহণ বড় কোনো গোলযোগ ছাড়াই শেষ হয়েছে। ছয় আসনের উপনির্বাচনে কোনো ভোট ডাকাতি হয়নি। আমরা যে তথ্য পেয়েছি, তাতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। তবে ভোটারের উপস্থিতি কম ছিল, হার কম, ভোটের হার ১৫ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে বলে ধারণা করছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) ভোট শেষে ঢাকায় নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এ সব কথা বলেন তিনি। এসময় সিইসি বলেন, ব্যাপক অনিয়ম, ভোট ডাকাতি হয়েছে- এমন কোনো তথ্য পাইনি। আমরা বলব, সাধারণভাবে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু হয়েছে ভোট।
এদিন সকাল সাড়ে আটটা থেকে বিকাল সাড়ে চারটা পর্যন্ত সাত শতাধিক কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট হয়। এ নির্বাচনে কোথাও ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা ছিল না। চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভোটকেন্দ্রের বাইরে বোমাবাজি ছাড়া সারাদিন আলোচনার মূল বিষয় ছিল ভোটার স্বল্পতা।
সিইসি বলেন, ‘উপস্থিতির হার তুলনামূলকভাবে কম ছিল। আনুমানিক ১৫-২০-২৫-৩০ শতাংশ হতে পারে। এটা নিশ্চিত করে এখনও বলা যাবে না, অপেক্ষা করতে হবে।
তিনি অরো বলেন, অনিয়ম বা কারচুপির উল্লেখযোগ্য কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিষয়ে নজর রেখেছি, সেখানেও বিরূপ কোনো তথ্য পেরিবেশিত হতে দেখিনি। নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে তথ্য পেয়েছি, দুই-একটি জায়গায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে; একটি ককটেল তাজা পাওয়া গেছে। দুই-একটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়েছে যেটা কেন্দ্রের বাইরে।
অনেক কেন্দ্রে ভোটকক্ষে অবাঞ্ছিত লোকের উপস্থিতির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সিইসি বলেন, ‘দুই-একটি কেন্দ্রে এমন তথ্য পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে। একটি কেন্দ্রে এক ভদ্রমহিলা তার দুটো বাচ্চাকে নিয়ে ঢুকেছে, আরেকটি জায়গায় এক ভদ্রমহিলা অসুস্থ ভোটারকে সহায়তা করতে ভেতরে প্রবেশ করেছিলেন। এগুলো হতে পারে। আমরা এগুলোকে খুব গুরুতর বা ব্যাপক (অনিয়ম) মনে করছি না, যা ভোটের ফলাফলকে পাল্টে দিতে পারে। ওই ধরনের ঘটনা মনে হয়নি। কিন্তু মুহূর্তে মুহূর্তে গণমাধ্যমে এখান থেকে দেখছিলাম- এমন কিছু দেখিনি যে ভোটকেন্দ্রে ভোট ডাকাতি হচ্ছে, ব্যাপক অনিয়ম হচ্ছে। সেদিক থেকে আমরা বলব সাধারণভাবে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু হয়েছে ভোট’।
উপস্থিতি কম কেন, সেই ব্যাখ্যায় সিইসি বলেন, কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা না হওয়ায় উপস্থিতি কম ও নিরূত্তাপ হতে পারে।
আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী ও প্রশাসনের সহায়তায় সন্তোষ প্রকাশ করে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সফল ও অর্থবহ করার বিষয়ে কমিশনের প্রয়াস অব্যাহত থাকবে।
গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকার গোলাপবাগের সমাবেশে বিএনপির সংসদ সদস্যরা একযোগে পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার পরদিন তারা সংসদ ভবনে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর দপ্তরে গিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন।