গাজীপুরের শ্রীপুরে বিদ্যুৎ কর্মকর্তার গাফিলতিতে নারী পোশাক শ্রমিক রাবিনা আক্তার (৩০) মৃত্যুর অভিযোগ করেছে নিহতের স্বামী। গত ১১ জানুয়ারী শ্রীপুর পৌরসভার বেড়াইদেরচালা এলাকার স্থানীয় স্কুলের পূর্ব পাশে ঝুলন্ত বৈদুতিক তাড়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ওই নারী পোশাক শ্রমিকের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় শ্রীপুর থানার একটি অপমৃত্য মামলা হয়েছে। নারী শ্রমিক নিহতের পর দুই সন্তান নিয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন স্বামী ইব্রাহিম।
নিহত রাবিনা আক্তার নেত্রকোনা জেলা সদর থানার সনুরা গ্রামের আব্দুর রশীদ মিয়ার মেয়ে এবং একই থানাধীন মনকান্দিরা গ্রামের ইব্রাহিমের স্ত্রী। সে শ্রীপুরের বেড়াইদেরচালা (আনসার রোড) এলাকায় আব্দুল মোতালেবের বাড়ীতে স্বামী ও দুই সন্তানকে নিয়ে ভাড়া থকে স্থানীয় এম এন আর পোশাক (সোয়েটার) কারখানায় অপারেটর হিসেবে চাকরি করতো।
নিহতের স্বামী আব্রাহিম জানান, গত ১১ জানুয়ারী রাত ৯টায় কারখানা ছুটির পর বাসায় ফেরার পথে বেড়াইদেরচালা এলাকার ধনাই বেপারী উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফারের ঝুলন্ত তারের সাথে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে সে আহত হয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন। সড়কের পাশে বিদ্যুতের তার ঝুলে থাকলে স্থানীয় লোকজন তাৎক্ষনিক মাওনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এ বিষয়টি অবগত করেন। ওইদিন দায়িত্ব থাকা অবস্থায় জুনিয়র প্রকোশলী (দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী মহা-ব্যবস্থাপক) রেজাউল করিম বিষয়টি দেখবেন বলে স্থানীয়দের আশ^স্ত করেন। দুর্ঘটনার ৬ ঘন্টা পর তিনি কর্মচারীদের ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে ঝুলন্ত তার সরিয়ে নেন। এতে নিহতের স্বামীসহ স্বজন ও স্থানীয়রা বিদ্যুৎ অফিসের লোকদের দায়িত্বে চরম অবহেলার অভিযোগ তোলেন। বিদ্যুস্পৃষ্ট হয়ে ওই নারী পোশাক শ্রমিক নিহতের ১৯ দিন পেরিয়ে গেলেও বিদ্যুৎ অফিস থেকে কোনো লোকজন তার পরিবারে কোনো ধরনের সমবেদনা ও আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করেননি। এতে দুই সন্তান নিয়ে চরম কষ্টে দিন পার করছেন নিহত পোশাক শ্রমিকের স্বামী ইব্রাহিম। শ্রীপুর থানার অপমৃতে্যুর মামলায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নিহতের কথা উল্লেখ রয়েছে।
অভিযুক্ত জুনিয়র প্রকোশলী রেজাউল করিম জানান, ওইদিন বৈদ্যুতিক ঝুলন্ত তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। যতদূর আমরা জানতে পেরেছি রাস্তা সরু থাকায় কাভার্ডভ্যানে চাপা দিলে নারী পোশাক শ্রমিক রাবিনা আক্তারের মৃত্যু হয়।
শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নয়ন ভূঁইয়া জানান, বৈদ্যুতিক শক হয়ে পোশাক শ্রমিক রাবিনা আক্তারের মৃত্যু হলেও মামলা করতে ইচ্ছুক না থাকায় বিনা ময়না তদন্তে নিহতের স্বজনদের কাছে নারী শ্রমিকের লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।