নওগাঁর মান্দা উপজেলা জুড়ে আমন ধান ক্ষেতে বাদামি গাছ ফড়িং বা কারেন্ট পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। গত কয়েকদিনে উপজেলার মাঠজুড়ে ধান ক্ষেতে এ পোকা ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকের জমিতে পোকার আক্রমণে ধান শুকিয়ে যাচ্ছে। আবার অনেকের ধান ক্ষেতে আক্রমন শুরু করেছে। ফলে দিশেহারা হয়ে পড়েছে উপজেলার কৃষকরা। এ পোকার আক্রমণে চলতি আমন মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এদিকে কৃষকদের এই আপদকালীন সময়ে কৃষি অফিসের কোন কর্মকর্তা মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের পাশে থেকে পোকার আক্রমণ থেকে ধান রক্ষার্থে কোন পরামর্শ দিচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। যদিও উপজেলা কৃষি অফিস বলছে, কারেন্ট পোকার আক্রমণ হলেও তা নিয়ন্ত্রনে আছে। ফলে ধানের ফলনে কোন সমস্যা হবে না। এই পোকা কোন এলাকায় আক্রমণ করলে দু’এক দিনের মধ্যে তা দ্রুত মাঠের পর মাঠ ছড়িয়ে পড়তে পারে। সরেজমিনে উপজেলার মৈনম ইউনিয়নের ভদ্রসেনা গ্রামে গেলে দেখা যায়, কারেন্ট পোকার আক্রমণে কৃষক মকছেদ আলীর প্রায় ৩ বিঘা জমির ধান মরে গেছে, ওই গ্রামে অন্যের জমি চাষ করে কৃষক সবুজ তার ১০ কাটা ধান মরে গেছে, দুর্গাপুর গ্রামের আলতাব তিন সদস্যের পরিবার নিয়ে বাস করেন তার সম্বল ১ বিঘা জমির ধান কারেন্ট পোকার আক্রমণে মরে গেছে। দুর্গাপুর গ্রামের আছের আলী তারও ১০ কাটা জমির ধান মরে গেছে। মাঠ জুড়ে এমন অসংখ্য ধান ক্ষেত চোখে পড়ে। উপজেলা ঘুরে অন্য ইউনিয়নগুলোর একই চিত্র দেখা যায়। কৃষকরা আরো জানান, চলতি মৌসুমে তারা উন্নত জাতের বীজ সংগ্রহ করে ধান চাষ করেছিলেন। সঠিক পরিচর্যা ও রোগ বালাই দমনে বিভিন্ন কোম্পানির কীটনাশক ব্যবহার করেন ধান ক্ষেতে। বর্তমানে ধান গাছে শীষ আসতে শুরু করেছে। কোন কোন ক্ষেতে ধানের শীষ বের হয়েছে। এমনকি কিছু কিছু জমিতে ধান পাকা ধরেছে। পোকার এমন আক্রামনে মাঠে সঠিক সময়ে কৃষি কর্মকর্তাদের দেখা ও তাদের কাছ থেকে পরামর্শ না পেয়ে দোকানদারের কথা মতন নিম্নমানের বিভিন্ন কোম্পানির কীটনাশক প্রয়োগ করে ফল পায়নি তারা। সচেতন ব্যক্তিরা বলছেন, পোকার আক্রমন দমন করা না গেলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব হবে না। মান্দা উপজেলার মৈনম ইউনিয়নের ভদ্রসেনা গ্রামের কৃষক মকছেদ আলী (৫৫) বলেন, আমার প্রায় ৩বিঘা জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে । এখনো কোন কৃষি কর্মকর্তা এলাকায় এসে পোকার আক্রমণ থেকে ধান রক্ষার্থে পরামর্শ দেয়নি। ফসল রক্ষায় আমি নিরুপায় হয়ে দোকানদারের পরামর্শে বিভিন্ন কোম্পানির কীটনাশক জমিতে দিয়ে কোন লাভ হয়নি। এ বিষয়ে মান্দা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শায়লা শারমিন বলেন, এই সময় পোকার আক্রমণ বাড়ে। তবে আমরা শুরু থেকে গ্রামে গ্রামে উঠান বৈঠক করে কৃষকদের সচেতন করার চেষ্টা করেছি। কারেন্ট পোকার আক্রমণ বেশি হলেও তা নিয়ন্ত্রণে আছে বলে দাবি করেন এই কর্মকর্তা।