ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার কৃষকদের। গত রবিবার রাত থেকে আজ মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত প্রবোল বাতাস ও টানা বৃষ্টিপাতের কারণে এ ক্ষতি হয়। এক মিনিটের জন্যও বৃষ্টি ও বাতাস থামেনি। টানা বৃষ্টিপাতের কারণে তলিয়ে গেছে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমির পাকা রুপা আমন ধানের ক্ষেত। ভেসে গেছে পেঁয়াজের বীজতলা। সেই সাথে মুড়িকাটা পেঁয়াজের ক্ষেতও গেছে তলিয়ে। ঝড়ের বাতাসে ভেঙ্গে হেলে পড়েছে প্রায় ১৭শ হেক্টর জমির পাকা ধানের গাছ। ভেঙ্গে গেছে বিভিন্ন প্রজাতির হাজারো গাছপালা। এতে কৃষকদের স্বপ্ন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে। সালথা উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের পুরুরা উত্তরপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল কুদ্দুছ মোল্যা বলেন, গতকালের ঝড়ে আমাদের রুপা আমন ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রায়ই ক্ষেতের ধান বাতাসে হেলে গেছে। এতাছাড়া আমরা (কৃষকরা) এই সময়টায় পেঁয়াজের দানা (বীজতলা) বপণের জন্য জমি প্রস্তত করে থাকি। ইতিমধ্যে আমাদের অনেকেই তাদের জমিতে বীজতলা বপণ করেছেন। প্রতিকেজী দানা (বীজতলা) ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা করে কিনে জমিতে বপণ করা হয়েছে। টানা বৃষ্টির কারণে পেঁয়াজের দানার ক্ষেত তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে বীজতলা। এখন জমির পানি শুকানোর পর ফের আবার দানা বুনতে হবে। এতে আমাদের যে ক্ষতি হয়েছে, কোনোভাবেই তা পোষানো সম্ভব নয়। উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের হারেজ মাতুব্বর, আওয়াল মৃধা, হাতেম সরদার, গট্টি ইউনিয়নের মজনু ফকির ও ছিরু মোল্যা বলেন, আমরা এখন পাকা রুপা আমন ধান কেটে ঘরে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। অধিকাংশ জমির ধান পেকে গেছে। এরমধ্যে হঠাৎ ঝড়-বৃষ্টিতে ধানের চরম ক্ষতি হয়ে গেল। প্রায় ক্ষেতের ধান তলিয়ে গেছে। বাতাসে ধানের গাছগুলো ভেঙ্গে মাটিতে মিশে গেছে। যার ফলে গাছ থেকে ধানগুলো ঝড়ে পড়ছে পানির ভিতরে। এ ছাড়া ঝড়ের কারণে হাজারো কলাগাসহ সব ধরণের ফল ও কাঠের গাছ ভেঙ্গে পড়েছে। এতে আমাদের চরম ক্ষতি হয়েছে। একদিনের ঝড়-বৃষ্টিতে আমাদের সারাবছরের স্বপ্ন মাটির সাথে মিশে গেছে। আমাদের এই ক্ষতি কিভাবে পোষাবো, সেই চিন্তায় আছি। সালথা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জীবাংশু দাস বলেন, সিত্রাংয়ে সারাদেশের মত সালথায়ও আক্রান্ত। আমরা ইতোমধ্যে বিভিন্ন ফসলী জমি পরিদর্শন করেছি। এখানে কলা, শাক-সবজি, পেঁয়াজের বীজতলা ও রুপা আমন ধান আক্রান্ত হয়েছে। এরমধ্যে ১৭৫০ হেক্টর রুপা আমন ধানের ক্ষেত আক্রান্ত হয়েছে ও ৫ হেক্টর জমির পেঁয়াজের বীজতলার ক্ষতি হয়েছে। আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছি, যেসব জায়গায় পানি জমে আছে, সেসব জায়গা থেকে পানি বের করে ফেলার জন্য। তবে আশার বিষয় হ”েছ, আবহাওয়া এখনও অনুকুলে, তাই বেশি ক্ষতির আশঙ্কা নেই।
নবচেতনা /আতিক