বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, গত শতকের দুটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার একটি বঙ্গবন্ধুর আবির্ভাব এবং অপরটি মুক্তিযুদ্ধ। এ দুটি ঘটনা আমাদের চার হাজার বছরের ইতিহাসকে পাল্টে দিয়েছে। যতদিন এ জাতির অস্তিত্ব থাকবে ততদিন এ দুটি ঘটনার অনুরণন হবে।
রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বাংলা একাডেমির আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি, লেখক ও গবেষক হাবিবুর রহমান সংকলিত ‘মুক্তিযুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ’ গ্রন্থের পরিবর্তিত ও পরিমার্জিত দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশ উপলক্ষে পাঠ উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইজিপি এ কথা বলেন।
মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশের অনবদ্য অবদানের কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে পুলিশের ব্যাপকতা ও বিশালত্ব ছিল। বঙ্গবন্ধুর ছায়াসঙ্গী ছিল বাঙালি পুলিশ, কারণ তারা জানত কি ধরনের বঞ্চনার শিকার তাদেরকে হতে হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বাঙালি পুলিশ মুক্তিযুদ্ধের সময় সশস্ত্র প্রশিক্ষণ দিয়ে, গুলি দিয়ে, অস্ত্র দিয়ে মানুষকে সহায়তা করেছে। এ কারণে মুক্তিযুদ্ধে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণ বেড়েছে। মুক্তিযুদ্ধ জনযুদ্ধে পরিণত হয়েছে। যতদিন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে কথা হবে ততদিন পুলিশের বীরত্বের কথা প্রকাশিত হবে। কারণ মুক্তিযুদ্ধের সাথে পুলিশের রক্তের ইতিহাস রয়েছে।
আইজিপি বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের বিস্ময়। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ১৬ কোটি মানুষের ৩২ কোটি হাত একত্রিত হয়ে আজ আমাদের মাথাপিছু আয় তিন হাজার ডলারের উপরে। করোনায় বিশ্বের অনেক জায়ান্ট ইকনোমির গ্রোথ কমে গিয়েছিল। অথচ আমাদের গ্রোথ ছিল স্টেবল। এর সবকিছুই সম্ভব হয়েছে ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিলেন বলে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক বাহিনীর নানা নিপীড়ন, নির্যাতনের কথা তুলে ধরে আইজিপি বলেন, আমরা যদি মুক্তিযুদ্ধের নির্মমতার কথা ভুলে যাই, তাহলে আমাদের অস্তিত্বকে ভুলে যাব। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কোন কম্প্রোমাইজ নয়। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে আমাদেরকে নিরপেক্ষ থাকতে হবে।
বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর আয়োজিত অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক কথাসাহিত্যিক ড. রতন সিদ্দিকী এবং ডিআইজি মো. হাবিবুর রহমান বক্তব্য রাখেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের পরিচালক মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
অনুষ্ঠানে পুলিশের অতিরিক্ত আইজিগণ, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাগণ এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।