প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নত ভবিষ্যতের জন্য সন্ত্রাস, মাদক, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ থেকে দূরে রেখে শিশুদের জীবনকে আলোকিত ও সুন্দর করে গড়ে তোলার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, অভিভাবক, শিক্ষক এবং সমাজের যারা বিশিষ্ট জন সবার প্রতি আমি অনুরোধ করবো- শিশুদের প্রতি কোনো ধরনের অত্যাচার বা প্রতিহিংসামূলক কাজ যাতে না হয় সে ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে এবং জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও মাদকের হাত থেকে শিশুদের মুক্ত রাখতে হবে। যারা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে আছেন এবং জনগণের প্রতিনিধি তাদের সবাইকেই এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী আজ বুধবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০১তম জন্মবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে জাতির পিতার সমাধি সৌধ কমপ্লেক্স গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।
‘আজকের শিশু আমাদের আগামী দিনের ভবিষ্যৎ’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আজকে যা কিছু আমরা করছি তা আগামীর শিশুদের জন্যই করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের যে মর্যাদা অর্জন করেছে সেখানেই থেমে থাকলে চলবে না। আরো এগিয়ে গিয়ে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলাই তার লক্ষ্য। এই স্বপ্নটা একদিন জাতির পিতা দেখেছিলেন।
তিনি বলেন, তার সরকার এমনভাবে দেশ পরিচালনা করছে যাতে তিনি বা তার সরকার ক্ষমতায় না থাকলেও ভবিষ্যতে যারা ক্ষমতায় আসবেন তারা যেন দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের শিশুরাই আগামীতে প্রধানমন্ত্রী হবে, মন্ত্রী হবে, বা বড় বৈজ্ঞানিক হবে বা দেশ পরিচালনার দায়িত্বে আসবে। সুতরাং সেভাবেই যেন শিশুরা নিজেদের গড়ে তুলতে পারে, সে লক্ষ্যে তার সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
শেখ হাসিনা শিশুদের উদ্দেশ্যে বলেন, ছোট্ট সোনামণিদের আমি বলবো তোমরা পড়াশোনা কর, তোমরা অভিভাবকের কথা শোনো এবং তোমাদের জন্য যতটুকু যা করার সেটা আমরা করে যাবো। জাতির পিতা দেশ স্বাধীন করে গেছেন কাজেই এই স্বাধীন দেশের প্রতিটি মানুষ সুন্দরভাবে বাঁচবে এবং উন্নত জীবন পাবে এবং ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
জাতির পিতার সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুননেছা ইন্দিরা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম স্বাগত ভাষণ দেন।
অনুষ্ঠানে শিশু-কিশোরদের সব সময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে তাদের ন্যায় ও সত্যের পথে চলারও পরামর্শ দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব সময় যেকোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবে, সেই সঙ্গে ন্যায় ও সত্যের পথে চলবে। তাহলেই জীবনে বড় হতে পারবে। জীবনটাকে উন্নত করতে পারবে। বাবা-মায়ের মুখও উজ্জ্বল হবে।
লেখাপড়া ও নৈতিক চর্চার মাধ্যমে নিজেদের যোগ্য হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ছোট্ট সোনামণিরা, আমি তোমাদের কাছে এটাই চাই, তোমরা তোমাদের জীবনটাকে সুন্দর করো, লেখাপড়া শেখ।
তিনি বলেন, আমি জানি করোনার কারণে এখন স্কুল বন্ধ। শিশুরা স্কুলে যেতে পারছে না। এটা অত্যন্ত কষ্টের। তারপরও আমি বলবো, ছোট্ট সোনামণিরা, তোমরা ঘরে বসে লেখাপড়া করো এবং সেই সঙ্গে খেলাধুলাও করবে। খেলাধুলা, সংস্কৃতি চর্চা এগুলো একান্তভাবে অপরিহার্য। তোমরাই তো ভবিষ্যৎ, তোমরাই এদেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে।