জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ’ প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে খরচ পড়বে ৪ হাজার ১২২ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। প্রকল্পটির মেয়াদকাল ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী-সচিবেরা রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কক্ষ থেকে সভায় অংশ নেন।
এদিন একনেক সভায় প্রায় ৫ হাজার ৬১৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা খরচে ৬ প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে খরচ করবে ৫ হাজার ৫১৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা, বিদেশ থেকে ঋণ নেবে ৫৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৪২ কোটি ৭ লাখ টাকা।
একনেক সভা শেষে এনইসিতে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ জয়নুল বারী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আজ মোট ৭টি প্রকল্প একনেকে তোলার কথা ছিল। একটি প্রকল্প গতকালই আইসিটি ডিভিশনে প্রত্যাখ্যান হয়। পরে তারা সেটি পেশ করবেন। মূলত আজকে ছয়টি প্রকল্প ছিল এবং ছয়টিই পাস হয়েছে।
আজ অনুমোদিত ৬টি প্রকল্পের মধ্যে তিনটি সংশোধিত এবং তিনটি নতুন প্রকল্প।
অনুমোদিত নতুন প্রকল্পগুলোর মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ’ প্রকল্প ছাড়াও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ‘বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণ’ প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ প্রকল্পে ৪৪৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকা খরচ পড়বে। প্রকল্পের মেয়াদকাল ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত।
এছাড়া স্থানীয় সরকার বিভাগের ‘পিরোজপুর জেলার পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প ৬০০ কোটি টাকা খরচে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
অন্যদিকে সংশোধিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের ‘রাজশাহী কল্পনা সিনেমা হল তেকৈ তালাইমারী মোড় পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন’ প্রকল্পটি প্রথম সংশোধন অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রকল্পটির মূল খরচ ছিল ১৬৪ কোটি ১৯ লাখ টাকা এবং আজকে সংশোধনের পর হলো ১২৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আজকে প্রকল্পটির ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে ৩৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা। প্রকল্পটি শুরু হয়েছিল ২০১৫ সালের জুলাইয়ে এবং শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে। এখন এর মেয়াদ বৃদ্ধি করে করা হলো ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত।
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘শরীয়তপুর জেলার জাজিরা ও নড়িয়া উপজেলায় পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষা’ প্রকল্পের প্রথম সংশোধন অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সংশোধনীতে প্রকল্পের খরচ ৩১৯ কোটি ৯৮ লাখ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রকল্পটির মূল খরচ ছিল ১ হাজার ৯৭ কোটি ২১ লাখ টাকা। এখন খরচ বৃদ্ধি করে করা হয়েছে ১ হাজার ৪১৭ কোটি ১৯ লাখ টাকা। প্রকল্পটি ২০১৭ সালের অক্টোবর থেকে ২০২১ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়ন করার কথা ছিল। এখন মেয়াদ বৃদ্ধি করে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের ‘কন্সট্রাকশন অব নিউ ১৩২/৩৩ কেভি অ্যান্ড ৩৩/১ কেভি সাবস্টেশন আন্ডার ডিপিডিসি’ প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধন অনুমোদন দেয়া হয়েছে। দ্বিতীয় সংশোধনীতে প্রকল্পের খরচ ৯২ কোটি ২৫ লাখ টাকা বাড়ানো হয়েছে। প্রকল্পটির মূল খরচ ১ হাজার ৮৫০ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। প্রথম সংশোধনীতে এর ব্যয় বাড়িয়ে করা হয়েছিল ২ হাজার ৩৮৭ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। আজকে দ্বিতীয় সংশোধনীতে করা হয়েছে ২ হাজার ৪৭৯ কোটি ৯৪ লাখ টাকা।