কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চলতি বছরে সুপারির বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলে দামও কয়েক গুন বেশি পেয়ে চাষিদের মুখে হাসি ফুঠেছে। টেকনাফ উপজেলায় হাজার হাজার পরিবার সুপারি থেকে প্রচুর টাকা রোজগার করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। এর মধ্যে কয়েক হাজার পরিবার বর্তমানে এ সুপারি চাষের উপর নির্ভরশীল। তারা অন্য চাষের চাইতে সুপারি চাষে কল্পনাতীত লাভবান হচ্ছেন। টেকনাফ উপজেলায় সুপারি চাষের উপযোগি আবহাওয়া হওয়ায় প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও উৎপাদিত সুপারি এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি করা হচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কারিগরী সহযোগীতা পেলে গ্রামীণ কৃষকরা সুপারি চাষ করে নিজেদের ভাগ্য বদলে আরো সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। উন্নত জাতের সুপারি একবার চাষ করে সারা জীবন আয়ের মুখ দেখতে পায় কৃষকরা। এতে পরিবারে প্রচূর টাকা আয়ের মাধ্যমে জীবন জীবিকায় অবদান রাখে। সুত্রে জানা যায়, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মহেশখালিয়া পাড়া , পশ্চিম গোদারবিল , বড় হাবিব পাড়া, নাজিরপাড়া, উত্তর লম্বরী, দক্ষিন লম্বরী, মিঠাপানি ছড়া, সাবরাং ইউনিয়নের মন্ডল পাড়া, সিকদার পাড়া, মুন্ডাল ডেইল, নয়া পাড়া, আচারবনিয়া পাড়া, মগপাড়া, হারিয়াখালি, লাপারঘোনা, কচুবনিয়া পাড়া, হ্নীলা ইউনিয়নের লেচুয়াপ্রাং, উলুচামরী, রঙ্গিখালী, পানখালী, মোচনী, মরিচ্যাঘোনা, হোয়াইক্যংয়ের মরিচ্যাঘোনা, কম্বনিয়া পাড়া, খারাংখালী, নয়াবাজার, কাঞ্জরপাড়া,রইক্ষ্যং, দইগ্যাকাটা, লাতুরীখোলা, হরিখোলা ও বাহারছড়া ইউনিয়নের নোয়াখালীয়া পাড়া, উত্তর শীলখালী, দক্ষিণ শীলখালীসহ বেশ কিছু এলাকার কৃষক সুপারি চাষ করে থাকেন। এখানকার কৃষি-অকৃষি পরিবারগুলো সহজে সুপারি চাষ করে প্রচুর টাকা আয় করছেন বলে জানা গেছে। সুপারি চাষীদের দেখাদেখিতে অন্য চাষে নিয়োজিত কৃষকগণও বর্তমানে এচাষের দিকে মনোযোগী হচ্ছে। কেননা এ গাছ একবার রোপন করলে প্রতি মৌসুমে ফল পাওয়া যায়। এদিকে টেকনাফ উপজেলা থেকে সপ্তাহের ৪ হাটে ১০-১২ ট্রাক সুপারি দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি করা হয়। এ উপজেলার সুপারি গুনে মানে উৎকৃষ্ট হওয়ায় বিভিন্ন জেলায় এর বেশ কদর রয়েছে। টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের নয়াপাড়ার কয়েকটি কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, টেকনাফ উপজেলার অন্যন্যা এলাকার চেয়ে সাবরাং ইউনিয়নের সুপারির মান অনেক গুন ভাল। সুপারি চাষ একবার ভাল ভাবে চাষ করতে পারলে সারা জীবন আপেলের মত গোলার ফলন ঘরে তুলতে পারে। বর্ষার শেষের দিকে এফল বাজারে বিক্রি করে। একেকটি গাছে ৪-৫ পন (৮০পিস) ফল ধরে। এক পন সুপারি ৩৫০-৪০০ টাকা বিক্রি করে থাকে। সাধারণ লোকজনও বাড়ির খোলা জায়গায় সুপারি চাষ করে সহজেই লক্ষাধিক টাকা আয় করছে। দেখা গেছে, টেকনাফের উন্নয়ন বঞ্চিত কৃষি এলাকা সদর ও সাবরাং ইউনিয়নের অধিকাংশ পরিবার সুপারি থেকে প্রচুর টাকা রোজগার করে থাকে। এর মধ্যে হাজারো পরিবার বর্তমানে এচাষের উপর নির্ভরশীল। তারা অন্য চাষের চাইতে সুপারি গোলা চাষে কল্পনাতীত টাকা আয় করছে। তাই উক্ত এলাকার কৃষকরা বেশী খুশী। সাবরাং ইউনিয়নের সিকদার পাড়া এলাকার কৃষক সৈওকত আলী সিকদার বলেন , কৃষি অফিসের সহযোগীতা ছাড়াই এখানকার কৃষকরা অন্য চাষ পরিবর্তে বাড়ির আশে পাশে খালি জায়গায় সুপারি চাষ করে আসছে। কৃষি অধিদপ্তরের কারিগরী সহযোগীতা পেলে কৃষকরা আরো বেশী লাভবান হবে। উল্লেখ্য, টেকনাফ উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সুপারির বাগান রয়েছে সাবরাং, টেকনাফ সদর ও বাহারছড়া ইউনিয়নে। এখানকার কৃষি-অকৃষি পরিবারগুলো সহজে সুপারি চাষ করে প্রচুর টাকা আয় করে থাকেন। সুপারি গাছ একবার রোপণ করলে প্রতি মৌসুমে ফল পাওয়া যায়। টেকনাফের আবহাওয়া ও মাটি চাষাবাদের উপযোগী হওয়ায় সার বা বিষ কোনো কিছু প্রয়োগ করতে হয় না। তাই চাষিদের খরচ নেই বললেই চলে। এব্যাপারে টেকনাফ উপজেলা উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা শফিউল আলম বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত কৃষকদেরকে উদ্ধুদ্ধ করে যাচ্ছি। যে কোনো চাষে কৃষকদের কারিগরি সহায়তার ও পরামর্শের জন্য আমাদের মাঠপর্যায়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ নিয়োজিত আছেন।