ক্যাম্পাস প্রতিনিধি: আজ ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৪তম জন্ম-জয়ন্তী। বাংলা সংস্কৃতির অন্যতম প্রধান পুরুষ কবি নজরুল ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথিকৃৎ লেখক।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম-জয়ন্তী উপলক্ষে রাজধানীর সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের বাংলা ও ইংরেজি বিভাগের যৌথ উদ্যোগে একটি আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
কলেজ মিলনায়তন ভবনের ২২৩ নং কক্ষে সকাল ১০ টায় শুরু হয় এর আনুষ্ঠানিকতা। ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ এবাদুল হক ভূঁঞার সভাপতিত্বে আলোচনা সভার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোঃ মোহসিন কবীর। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ফরিদা ইয়াসমিন এবং অফিসার্স কাউন্সিলের সম্পাদক অধ্যাপক মোঃ মোতালিব হোসেন। এই অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলা ও ইংরেজি বিভাগসহ অন্যান্য বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
সাম্যের কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম-জয়ন্তী অনুষ্ঠানের সূচনা হয় পবিত্র কোরান তেলওয়াত, ধর্মগ্রন্থ গীতা এবং পবিত্র বাইবেল পাঠের মাধ্যমে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ফরিদা ইয়াসমিন গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে। তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও কাজী নজরুল ইসলাম এদের তুলনা করেন বলেন, এদের একজন ছিলেন রাজনীতির কবি এবং আরেকজন সাহিত্যের কবি। এই দুইজন ছিলেন একে অপরের পরিপূরকের মত। দুইজন মানুষই সাধারণ মানুষের মুক্তির, মানবিকতা ও সাম্যের কথা বলেছেন। এ সময় তিনি, উপস্থিত সকলের সামনে স্বাধীনতা যুদ্ধের অনুপ্রেরণায় নজরুল রচিত রণসঙ্গীতের ভূমিকার কথা তুলে ধরেন উনার আলোচনায়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোঃ মোহসিন কবীর এত সুন্দর একটি অনুষ্ঠান উপহার দেওয়ার জন্যে নজরুল জন্ম-জয়ন্তী উদযাপন কমিটির সকলকে ধন্যবাদ জানান। শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আরও প্রাণ পেয়েছে। তাদের সকলের অংশগ্রহণ তাঁকে অভিভূত করেছে বলে জানান।
তিনি বলেন, সাহিত্য মানেই সাহিত্য হোক সেটা বাংলা, ইংরেজি কিংবা গ্রীক। বাংলা বা ইংরেজি বিভাগের ছাত্রদের সকলেরই এ তিনটি সাহিত্য পড়াশোনা করতে হয়। শুধুমাত্র বাংলা সাহিত্য পাঠ করলে বিশ্বসাহিত্যের একটি বড় অংশ অজানাই রয়ে যায় অপরদিকে শুধু ইংরেজি সাহিত্য পাঠ করলে বাংলা সাহিত্যের বড় অংশ অদেখাই রয়ে যায়। কাজেই বলা যায় পৃথিবীর সমস্ত সাহিত্যের রয়েছে একটি সেতুবন্ধন।
মানবপ্রেম, দেশপ্রেম, প্রকৃতিপ্রেম, মানুষকে ভালবাসা, সৃষ্টিকে ভালবাসা এবং কল্যাণসৃষ্টির প্রত্যাশা প্রত্যেক কবি সাহিত্যিকের থাকে। নজরুলেরও প্রতিটি কবিতায় ছিল এসবের উপস্থিতি। নজরুল একাধারে ছিলেন দ্রোহ ও প্রেমের কবি।
এছাড়াও আলোচনা সভা শেষে আবৃত্তি, নৃত্য, নাটকে মুখরিত হয়ে উঠে কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম-জয়ন্তীর উদযাপন।