২০২০ সালে জর্জ ফ্লয়েডের ঘটনা এখনও আমেরিকার কৃষ্ণাঙ্গদের মনকে নাড়া দেয়। সেই আঘাত আবার ফিরে এল শুক্রবার। আমেরিকার মিসিসিপি রাজ্যের মেমফিসে টায়ার নিকোলস নামে আমেরিকার এক কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিক পুলিশের হাতে বেধড়ক মার খেয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন। শুক্রবার সেই ঘটনার প্রমাণ পাওয়া গেছে। ওই কৃষ্ণাঙ্গ যুবকের ওপর হওয়া পুলিশি নির্যাতনের ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে।
গত ৭ জানুয়ারি ৫ পুলিশ অফিসারের নির্যাতনের শিকার হন নিকোলস। এর তিনদিন পর হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার। ভিডিওতে দেখা যায় নির্যাতনের সময় মা মা বলে আর্তনাত করছিলেন তিনি। চিৎকার-আর্তনাতের পরও তার ওপর দীর্ঘ সময় চলে নির্যাতন।
২৯ বছর বয়সী নিকোলসকে ট্রাফিক আইন অমান্য করার অপরাধে আটকায় পুলিশ। কিছুক্ষণ কথা বলার পর ভয়ে তিনি দৌড় দিলে পুলিশ সদস্যরা তাকে পাকড়াও করে বর্বর নির্যাতন চালান। তার মুখে একাধিক লাথি, ঘুষি মারেন তারা।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ভিডিওটি দেখার পর বলেছেন, এই ‘ভয়ানক ভিডিও’ দেখে ‘অত্যন্ত ব্যথিত’ হয়েছেন তিনি।
পুলিশের পক্ষ থেকে প্রথমে বলা হয়েছিল বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোয় নিকোলসকে আটক করা হয়েছিল। যে ৫ পুলিশ সদস্য নিকোলসের ওপর নির্যাতন চালিয়েছেন তারাও সবাই কৃষ্ণাঙ্গ।
মেমফিস পুলিশের পক্ষ থেকে সব মিলিয়ে চারটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। প্রথম ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশ নিকোলসকে গাড়ি থেকে বের হয়ে মাটিতে শুয়ে পড়তে বলছে। এ সময় নিকোলস বলেন, “আমি কিছু করিনি।”
এ সময় এক অফিসার গালাগাল দিয়ে বলেন, “মাটিতে শুয়ে পড়।” আরেকজন নিকোলসকে টেজার দিয়ে ইলেকট্রিক শক দিতে বলেন।
আরেকজন অফিসারকে চিৎকার করে বলতে শোনা যায়, “আমি তোমার হাত ভেঙে দেওয়ার আগে হাত পেছনে রাখ।”
পুলিশের এমন আচরণে ভয় পেয়ে যান নিকোলস। তখন তিনি বলেন, “আপনারা এখন অনেক বাড়াবাড়ি করছেন। আমি বাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা করছি।”
ওই মুহুর্তে নিকোলসকে ইলেকট্রিক শক দেওয়া হলে তিনি দৌড় দেন।
এরপর সিসি ক্যামেরায় ধারণকৃত একটি ভিডিওতে দেখা যায় নিকোলসকে মারধর করছেন তারা। তার মুখে মরিচের গুড়া ছিটিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মাথায় কিল ঘুষি মারা হচ্ছে।
এদিকে এ ঘটনায় অভিযুক্ত পাঁচ পুলিশ সদস্যকে ইতোমধ্যে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।
নির্যাতনের ভিডিও প্রকাশের পর নিকোলসের মা জানিয়েছেন, তার ছেলেকে বাড়ি থেকে মাত্র ২৩০ ফুট দূরে হত্যা করা হয়েছে।
নিকোলসের চার বছর বয়সী একটি সন্তান রয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো। সূত্র: বিবিসি