দখল আর দূষনে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের চৌমুহী-ফেনীমুখী তুলাতলি খাল। এতে পরিবেশ বিপর্যস্ত হওয়ার পাশাপাশি ব্যাহত হচ্ছে মৎস ও কৃষি উৎপাদন। তাছাড়া খালটির গভীরতা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। এতে দূর্ভোগে পড়েন খাল পাড়ের হাজার হাজার মানুষ। সম্প্রতি খালটির কিছু অংশ খনন করা হলেও পরিকল্পনার অভাবে তা আবার ভরাট হয়ে গেছে।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, চৌমুহনী থেকে ফেনীমুখি তুলাতুলি খালটিতে এক সময় চলতো পালতোলা নৌকা। গ্রামীণ যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিলো খালটি। কিন্তু বিগত এক যুগ ধরে ক্রমাগত দখল আর দূষনে খালটি এখন অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। একশ্রেনীর ভূগ্রাসীচক্র খালের পাশে নির্মাণ করছে বহুতল ভবন।
খালের পাশ হাট বাজারের দোকান থেকে ফেলা হচ্ছে ময়লা আবর্জনা। এতে দিন দিন সরু নালায় পরিণত হচ্ছে খালটি। বিশেষ করে চৌমুহনী পূর্বা বাজার থেকে শুরু হয়ে মিয়ারপোল, সেতুভাঙ্গা, জমিদারহাট, শ্রমিরমুন্সির হাট, সেবারহাট, দাগনভূঁইয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় খালের পাড় দখল করে দোকানপাট, বহুতল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। দীর্ঘদিন খালটি সংস্কার না করায় বর্ষ মৌসুমে সামান্য বৃষ্টিতে পুরো এলাকার কৃত্রিম বন্যার সৃষ্টি হয়। বাড়ে মানুষের দূর্ভোগ।
সেনবাগের ফাতেহপুর এলাকার বাসিন্ধা নিজাম উদ্দিন জানান, আগে আমরা খাল থেকে পানি নিয়ে চাষাবাদের কাজে লাগাতাম, এখন পানি এতো বিষাক্ত যে গায়ে লাগলে ফোস্কা ফুটে যায়। ফসল নষ্ট হয়ে যায়। এই খালের পানিতে একটা মাছও নেই, নেই কোন প্রানীর অস্তিত্ব। খাল থেকে পাশ^বর্তি জমিনগুলো নিচু হওয়ায় খালের পানি উল্টো ধানি জমিতে জমে থাকে, এতে চাষাবাদ ব্যাহত হয়।
দীর্ঘদিন খালটি খনন না করায় পরিবেশ বিপর্যয়ের পাশাপশি মৎস ও কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান বেগমগঞ্জ উপজেলা সিনিয়র মৎস অফিসারআলমগীর হোসেন আজাদী ও জেলা কৃষি অফিসের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক নুরুল ইসলাম।
এ ব্যাপারে নোয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীমুন্সী আমির ফয়সাল জানান, নোয়াখালীতে খাল খনন চলমান রয়েছে এবং তিন বছর আগে তুলাতলি খালটির কিছু অংশ খনন করা হয়। খাল দখল আর দুষন মুক্ত রাখতে সবাইকে সজাগ হওয়ার আহবান জানান তিনি।