টাঙ্গাইলে সুগন্ধি জাতের ব্রি-৩৪ ধান চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন কৃষকরা। চলতি মৌসুমে এই ধান আবাদ করে কৃষকরা অনেক বেশি লাভবান হয়েছেন।
টাঙ্গাইলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবার জেলায় ছয়শত ১৬ হেক্টর জমিতে ব্রি-৩৪ ধানের আবাদ হয়েছে। ফলন হয়েছে হেক্টর প্রতি দুই দশমিক ৪৯ মেট্রিকটন। মোট ১৫ শত মেট্রিকটন ধান উৎপাদন হয়েছে।
কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, পোলাও, বিরিয়ানি, পায়েশসহ মুখরোচক খাবার তৈরিতে সুগন্ধি চালের কোন বিকল্প নেই। দেশে প্রচুর পরিমাণে চাহিদা রয়েছে এই চালের। এতে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ সুগন্ধি চাল আমদানি করতে হয় বিদেশ থেকে। এতে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার খরচ হয়।
এ কারণে কৃষি বিভাগ উদ্যোগ নিয়েছে দেশেই সুগন্ধি জাতের ধান বেশি পরিমাণে চাষ করার।
এরই অংশ হিসেবে টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলার কৃষকদের এবার সুগন্ধি জাতের ব্রি-৩৪ ধান চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হয়। সুগন্ধি জাতের ধান চাষে আগ্রহী অনেক কৃষককে প্রনোদণা কর্মসূচির আওতায় দেওয়া হয় ব্রি-৩৪ জাতের ধানের বীজ ও সার।
এই ধানের ফলন কালোজিরাসহ অন্যান্য সুগন্ধি জাতের চেয়ে বেশি হয় বলে জানায় কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা। সুগন্ধি জাতের ধান ও চালের বাজার মূল্য আমন ধানের চেয়ে অনেক বেশি। এ কারণে কৃষকরা আমন মৌসুমে সুগন্ধি জাতের ধান চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
কৃষকরা জানান, আমন ও অন্যান্য ধানের থেকে ব্রি-৩৪ ধানের দাম বেশি, ফলনও ভালো হয়। পোকা-মাকড় আক্রমণ করে না বললেই চলে।
দেলদুয়ার উপজেলার আটিয়া ইউনিয়নের নান্দুরিয়া গ্রামের কৃষক আরফান আলী বলেন, ব্রি-৩৪ জাতের ধান চাষ এবার করেছেন। কালোজিরা ও চিনিগুড়া আগে চাষ করতেন। এবার ব্রি-৩৪ চাষ করে ওই সব জাতের চেয়ে অনেক বেশি ফলন পেয়েছেন।
একই ইউনিয়নের গড়াসিন গ্রামের কৃষক আবু বক্কর মিয়া বলেন, সুগন্ধি এ ধানের দাম অনেক বেশি। তাই আমরা এ ধান আবাদ করছি। আমরা যদি সরকারি ভাবে আরও বেশি বীজ পেতাম। তাহলে আবাদও বেশি করতে পারতাম লাভও বেশি হতো আমাদের।
টাঙ্গাইলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আহসানুল বাশার বলেন, কালোজিরা চিনিগুড়াসহ অন্য সুগন্ধি ধানের তুলনায় ব্রি-৩৪ ধান প্রতি হেক্টরে একটন বেশি করে উৎপাদন হয়। এ জন্য কৃষি বিভাগ থেকে ব্রি-৩৪ ধান আবাদ করতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হয়।
কৃষকদের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে সব ধরণের সহযোগিতা করা হচ্ছে। সুগন্ধি ধান চাষ অনেক লাভজনক। এই ধান চাষ বেশি সম্প্রসারিত হোক সে লক্ষ্যে কৃষিবিভাগ কাজ করছে। কৃষকরা আরও লাভবান হোক এজন্য এই জাতের বীজ সংগ্রহ করা থেকে শুরু করে অন্যান্য সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। আমরা কৃষিবিভাগ থেকে কৃষকদের সব ধরনের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।
দৈনিক নবচেতনার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন