জয়পুরহাটে জমিজমা সংক্রান্ত জের ধরে এক গৃহবধূকে হত্যা মামলায় দুই ভাইকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ রায়ের দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল উপজেলাধীন সুতরাইল গ্রামের মৃত আব্দুল সালামের ছেলে দুলাল হোসেন (৫৪) ও আওলাদ হোসেন (৪৬)। রবিবার দুপুর ১২টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক নুর ইসলাম এ রায় প্রদান করেন। মামলার বিবরণ সুত্রে জানা গেছে, ক্ষেতলাল উপজেলার সুতরাইল গ্রামের মৃত আব্দুল সালামের ছেলে দুলাল ও আওলাদ দুই ভাইয়ের সহিত দীর্ঘ দিন থেকে জমিজমা লইয়া গোলমাল চলে আসছে ওই গ্রামের মৃত মুমির উদ্দিন সরদারের ছেলে কোরবান আলী সরদার ও তার পরিবারের। ওই দুই পরিবারে দ্বন্দ্ব দীর্ঘ দিনের। গত ২০০৮ সালের ২ অক্টোবর ১০ টার দিকে জায়গা জমিকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে ঝগড়াঝাটি হয়। এক পর্যায়ে ওই দিন দিবাগত রাতে কোরবান আলী সরদারের ছোট্ট ছেলের মোমিনের স্ত্রী হাসিনা (৩৯) ও নাতি মেহেদী হাসান (২১) মাটির বাড়ির একটি ঘরে ঘুমিয়ে ছিল। রাত অনুমান ১/২ টার দিকে দু’জন লোক প্রাচীর টপকাইয়া ওই ঘরে প্রবেশ করে হাসিনাকে বুকের উপর বসিয়ে গলা টিপিয়া হত্যা করার সময়ে মেহেদী হাসান বাতির আলোতে দুলাল ও আওলাদকে দেখতে পায়। সেসময় মেহেদী হাসান ডাক চিৎকার দিলে চাকু দিয়া ভয় দেখিয়ে পালিয়ে যায় দুলাল ও আওলাদ। পরে মেহেদী হাসান হত্যার বিষয়টা পরিবারে জানাই। পরিবারের সাথে আলাপ আলোচনা করে পরের দিন সংশ্লিষ্ট থানা মামলা দায়ের করেন হাসিনার শশুর কোরবান আলী সরদার। মামলা চলাকালে ১৭ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষগ্রহন শেষে রোববার দুপুরে দুই সহোদর ভাইয়ের যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দেন আদালত। মামলার আসামী পক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট নন্দ কিশোর আগরওয়ালা বলেন, মামলার এ রায়ে তিনি সন্তুষ্ট নন এবং উচ্চ আদালতে আপিল করবেন। রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করে মামলার বাদী পক্ষের সরকারি কৌশলী এ্যাডভোকেট নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল বলেন, দীর্ঘ শুনানী শেষে এ মামলায় দুই সহোদর ভাইকে প্রতিবেশী গৃহবধু হত্যার অভিযোগে যাবজ্জীবন ও দুজনের ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন।
নবচেতনা/আতিক