স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে দুর্নীতি প্রতিরোধে দুর্নীতি দমন কমিশনের-দুদক ২৫ দফা সুপারিশের অগ্রগতি জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। দুই মাসের মধ্যে এ বিষয়ে হাইকোর্টকে জানাতে বলা হয়েছে। বুধবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী জামিউল হক ফয়সাল ও ইশরাত হাসান। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ কে এম ফজলুল হক।
২৭ সেপ্টেম্বর সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান ও আইনজীবী মো. আমিনুর রহমান চৌধুরী এ রিট করেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডিজিসহ ছয়জনকে বিবাদী করা হয়েছে। রিট আবেদনে সুপারিশের বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা প্রতিবেদন আকারে আদালতে দাখিলের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে রিট করা হয়।
২০১৯ সালের ৩১ জানুয়ারি স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে দুর্নীতির ১১টি খাত চিহ্নিত করে তা প্রতিহতের জন্য মন্ত্রণালয়ে ২৫ দফা সুপারিশ করে দুদক। প্রতিবেদনে স্বাস্থ্য খাতের বিভিন্ন কেনাকাটা, নিয়োগ, পদোন্নতি, বদলি, পদায়ন, চিকিৎসা দেয়া, চিকিৎসায় ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি, ওষুধ সরবরাহসহ বিভিন্ন দুর্নীতির উৎস চিহ্নিত করা হয়।
এসব উৎস বন্ধে দুদকের করা সুপারিশের মধ্যে রয়েছে, তথ্যবহুল সিটিজেন চার্টার প্রদর্শন, মালামাল রিসিভ কমিটিতে বিশেষজ্ঞ সংস্থার সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত, ওষুধ ও যন্ত্রপাতি কেনার ক্ষেত্রে ইজিপি টেন্ডার প্রক্রিয়া অনুসরণ, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও বেসরকারি হাসপাতাল স্থাপন ও অনুমতি দেয়ার ক্ষেত্রে নিজস্ব স্থায়ী চিকিৎসক বা কর্মচারী এবং কার্যনির্বাহী কমিটি ইত্যাদি রয়েছে কিনা এসব বিষয় নিশ্চিত হওয়া। এছাড়া কর্মকর্তা-কর্মচারী বদলির নীতিমালা প্রণয়ন, চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে ওষুধের নাম না লিখে জেনেরিক নাম লেখা বাধ্যতামূলক করা, ইন্টার্নশিপ এক বছর থেকে বাড়িয়ে দুই বছর করা এবং বর্ধিত এক বছর উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালে থাকা বাধ্যতামূলক করা, চিকিৎসকদের (সরকারি/বেসরকারি) পদোন্নতির জন্য সরকারি চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে পিএসসি ও বেসরকারিদের ক্ষেত্রে মহাপরিচালক (স্বাস্থ্য) এবং পিএসসির প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত কমিটির মাধ্যমে সুপারিশ দেয়া।
এ প্রতিবেদনের বিষয়ে ৫ জুন দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, গত বছর কমিশনের প্রাতিষ্ঠানিক টিমের একটি প্রতিবেদন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হয়েছে। আমরা মনে করি, এ প্রতিবেদনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করা হলে স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি-অনিয়ম প্রতিরোধ করা সহজ হবে। তিনি আরও বলেন, যন্ত্রপাতি কেনাসহ স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে কমিশন নির্মোহভাবে আইনি দায়িত্ব পালন করবে।