নড়াইলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সদরের মালিবাগে পুলিশ বক্স ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ ও নাকশী বাজারে পুলিশ পিকআপ আগুন দিয়ে ভস্মীভূত করার ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে ৬০০ অজ্ঞাত নামা আসামির বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। গত শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে সদর সার্কেলে কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক মো. মফিজুর রহমান শেখ বাদি হয়ে নড়াইল সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন। নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম সময় সংবাদকে মামলার বিষয়টি রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে নিশ্চিত করেছেন। মামলা বিবরণীতে বলা যায়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শনিবার (৪ আগস্ট) সকাল ১১ টায় সদরের নাকশী বাজার এলাকায় অজ্ঞাতনামা ৫০০ থেকে ৬০০ জন লোক হাতে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সমাবেত হয়। সাড়ে ১১ টার দিক সরকার বিরোধী স্লোগান দিতে দিতে মিছিল নিয়ে নড়াইল শহরে প্রবেশের উদ্দেশ্যে রাসেল সেতুর পূর্ব পাশে পৌছালে সেখানে পূর্ব থেকে অবস্থান নেওয়া আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বাঁধা দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়। সংঘর্ষে কয়েকজন অজ্ঞাতনামা অস্ত্রধারী গুলি বিনিময় করায় কিছু লোক আহত হয়। উভয় পক্ষের সংঘর্ষে উভয় পক্ষের মধ্যে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা দেখা দিলে খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আল মেহেদীর নেতৃত্বে পুলিশের দল উপস্থিত হয়ে উভয়পক্ষের ছত্রভঙ্গ করতে শটগান থেকে ১০১ রাউন্ড কার্তুজ , গ্যাসগানের ৩১ টি টিয়ারশেল ফাঁকা ফায়ার করে৷ ফাঁকা ফায়ারের পর উভয় পক্ষ ছত্রভঙ্গ হয়ে আসামীদের একটি অংশ ঘটনাস্থল থেকে পিছু হটে সদরের মালিবাগ মোড়ে অবস্থান নেয়। আরও জানা যায়, মালিবাগ মোড়ে পুলিশ বক্স ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগ করে আনুমানিক ৫ লাখ টাকার ক্ষতিসাধন করে নাকশী বাজারের দিকে রওনা হয়। এসময় ওই এলাকায় নড়াইল ফিলিং স্টেশনের সামনে নড়াইল ঢাকা মহাসড়কে পুলিশের একটি টহল দল পিকআপে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এসময় পুলিশ আন্দোলনকারীদের শান্ত হওয়ার জন্য অনুরোধ করলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে উল্টো পুলিশের উপর বৃষ্টির মত ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এ ঘটনায় পুলিশের বেশ কয়েকজন সদস্য আহত হয়। বেপরোয়া আক্রমণের ফলে পুলিশ পিছু হটে পার্শ্ববর্তী আব্বাস মেম্বারের বাড়িতে আশ্রয় নেন। আক্রমণ কারীরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে আশ্রয়দাতার বাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে। এতে পুলিশের আশ্রয়দাতার বাড়িতের আসবাবপত্র ভেঙ্গে ২ লাখ টাকার ক্ষতিসাধন হয়। মামলার বিবরণীতে জানা যায়, পুলিশ প্রাণ বাচাতে বাড়ির মধ্যে অবস্থানকালে অজ্ঞাতনামা আসামিরা তাদের বহনকারী ডাবল কেবিনের পিক-আপ ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এসময় পুলিশের জানমাল ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষার্থে শটগান থেকে ১৭৫ রাউন্ড কার্তুজ ও গ্যাস গান হতে ২০ টি টিয়ারসেল ও ৩ টি সাউন্ড গ্রেনেড ফাঁকা ফায়ার করলে আন্দোলন করীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এ ঘটনায় অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পুলিশ পিক-আপ টি ভস্মীভূত হয়ে ৩০ লাখ টাকার ক্ষতিসাধন হয়েছে বলে মামলা বিবরণী উর্রেখ করা হয়।