
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কাওয়াকোলা ইউনিয়নের ভুতমা চরে প্রথমবারের মতো সম্পূর্ণ নতুন জাতের উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ স্ট্রবেরি জাতের ভুট্টা চাষ করে চমকে দিয়েছেন কৃষক আব্দুস ছাত্তার। লাল রঙের ভুট্টা চাষে ভালো ফলন হয়েছে। পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এই ভুট্টা চাষ কৃষকদের কাছে এরই মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। জানা গেছে, বাংলাদেশে প্রথম চীন থেকে আমদানি করা বীজ দিয়ে কাজী সিডস্ স্ট্রবেরি ভুট্টার পরীক্ষামূলক চাষ শুরু করেছে। যমুনার চরে প্রথমবারের মতো সম্পূর্ণ নতুন জাতের উচ্চ প্রোটিনসমৃদ্ধ স্ট্রবেরি ভুট্টার চাষ হয়। আকারে ৬ থেকে ৮ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়। দেখতে টকটকে লাল রঙের। দেশে প্রচলিত অন্য জাতের ভুট্টার চেয়ে এক মাস আগে ফল সংগ্রহ করা যায়।আগাম ফলন ও বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকায় বিশ্বের অনেক দেশেই এর জনপ্রিয়তা রয়েছে। সাধারণ সাদা বা হলুদ ভুট্টার তুলনায় লাল ভুট্টায় ৩৫০ শতাংশ বেশি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। স্টবেরি জাতের এই ভুট্টা ক্যানসার প্রতিকারে সাহায্য করে। এটির বিঘা প্রতি ফলন হয় ২০ মণ। এর দাম অন্য সাধারণ ভুট্টার চেয়ে অনেক বেশি। এ বিষয়ে ভুতমা চরের কৃষক আব্দুস ছাত্তার বলেন, এবার প্রথমবারের মতো এক বিঘা জমিতে লাল ভুট্টার চাষ করেছি। এক বিঘা জমিতে ফলন হয়েছে ২০ মণ। চাষ করতে বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে প্রায় ১৬ হাজার টাকা। তবে সাধারণ ভুট্টার চেয়ে লাল ভুট্টার দাম কেজিপ্রতি ৩০ টাকা বেশি। অন্যদিকে এর প্রচুর চাহিদাও রয়েছে।একই চরের কৃষক আব্দুল মালেক বলেন, আমরা এই ভুট্টা আগে কখনো দেখিনি। এতো সুন্দর রং, যা প্রত্যেকেই পছন্দ করেন। পাশাপাশি এর ফলনও অনেক বেশি। তাই আগামী বছর আমিও এই ভুট্টার চাষ করব। কাওয়াকোলার বর্নি চরের কৃষক আসাদুল ইসলাম বলেন, আমার পাশের চরে লাল ভুট্টার চাষ হয়েছে। আমি প্রথমে ধরে নিয়েছিলাম এর তেমন ফলন হবে না। কিন্তু এখন ফলন দেখে আমরাও আশাবাদী। তিনি আরও বলেন, এই জাতের ভুট্টার ফলন আগাম হয়। ভালো ফলন ও রং ভালো হওয়ায় আমার অনেক পছন্দ হয়েছে। আগামী বছর আমি নিজেই এই ভুট্টার চাষ করব বলে ঠিক করেছি। কাজী সিডস্ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী সোহেল রানা বলেন, সরাসরি চীন থেকে স্ট্রবেরি ভুট্টার বীজ আমদানি করা হয়েছে। সাধারণ সাদা বা হলুদ ভুট্টার তুলনায় লাল ভুট্টায় ৩৫০ শতাংশ বেশি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। স্ট্রবেরি ভুট্টা ক্যানসারের জন্য বেশ উপকারী। স্নায়ুতন্ত্র ও ডায়াবেটিসের জন্য স্ট্রবেরি ভুট্টার উপকারিতা রয়েছে। যেহেতু এই ফসলের অনেক উপকারিতা আছে তাই সরকার এর চাষ সম্প্রসারণে উদ্যোগ নেবে বলে আমরা আশাবাদী। কাওয়াকোলা ইউনিয়নের চেয়াম্যান জিয়াউর রহমান জিয়া মুন্সি বলেন, আমি একজন কৃষকের ছেলে। চরাঞ্চলে আমরাও চাষাবাদ করি। এই চরে প্রচুর ভুট্টার চাষ হয়। কিন্তু লাল রঙের ভুট্টা কখনো চাষ করা হয়নি। এবার হয়েছে। ফলনও নাকি খুব ভালো হয়েছে এবং দেখতেও ভীষণ সুন্দর। সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি কর্মকর্তা আ জ ম আহসান শহীদ সরকার কাজল বলেন, ভুট্টার এই জাতটি সম্পূর্ণ নতুন। এটি চীন থেকে আনা হয়েছে। এর আগে এখানে এই জাতের ভুট্টার চাষ হয়নি। এর দাম অন্য সাধারণ ভুট্টার তুলনায় বেশি হওয়ায় স্থানীয় কৃষকরা আগ্রহী হ”েছন। আগাম ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি হওয়ায় এলাকার কৃষক এই ভুট্টা চাষ করবেন। এই ভুট্টা ৬ থেকে ৮ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়। দেখতে লাল রঙের। অন্য জাতের ভুট্টার চেয়ে ৩০ দিন আগে স্ট্রবেরি ভুট্টার ফল সংগ্রহ করা যায়।