টাঙ্গাইল পৌরসভাস্থ পাড় দিঘুলিয়ায় বাপ্পি হত্যাকান্ডে ঝটিকা অভিযানে ঘটনায় জড়িত ০৩ (তিন) আসামীকে গ্রেফতার এবং বিজ্ঞ আদালতে ০৩(তিন) আসামীর স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান ও হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দা উদ্ধার” গত ২৩ মে রাত্র অনুমান ০১.৪০ ঘটিকার সময় টাঙ্গাইল সদর থানাধীন দিঘুলিয়া সাকিনস্থ টাঙ্গাইল শহর থেকে দাইন্যা অভিমুখী রাস্তায় দিঘুলিয়া শহীদ মিজানুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে পাকা রাস্তার উপর একজন পুরুষ অজ্ঞাত লাশ পড়ে থাকার খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। এলাকাবাসী ও ভিকটিমের পরিবারের সনাক্ত মতে আলী আকবর বাপ্পী (৩৮), পিতা-মৃত দেলোয়ার বেপারী, সাং পারদিঘুলিয়া, থানা ও জেলা- টাঙ্গাইল। ঘটনাটিকে একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড ধরে নিয়ে টাঙ্গাইল সদর থানা পুলিশ দ্রুত লাশটির সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে ময়না তদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে প্রেরন করেন। ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পরপরই জনাব মোঃ সোহেল রানা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল, টাঙ্গাইল এর নির্দেশনায় অভিযান পরিচালনার জন্য একাধিকটিম গঠন করা হয়। ইতোমধ্যে নিহত মা আজিমন (৫৫), পিতা-মৃত গাজী বেপারী, স্বামী-মৃত দেলোয়ার বেপারী, সাং- পারদিঘুলিয়া, থানা ও জেলা-টাঙ্গাইল বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামী/ আসামীদের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের প্রেক্ষিতে টাঙ্গাইল সদর থানার ,এফআইআর নং-৩১, তারিখ- ২৩ মে, ২০২৩; জি আর নং- ১৭৮, তারিখ- ২৩ মে, ২০২৩, ধারা- ৩০২/৩৪ পেনাল কোড মূলে হত্যা মামলা রুজু করা হয়। মামলা রুজুর পরপরই পুলিশ সুপার জনাব সরকার মোহাম্মদ কায়সার মহোদয়ের নির্দেশে থানা পুলিশের একটি চৌকশ দল অভিযান শুরু করে। নির্দেশ মোতাবেক জনাব মোঃ সোহেল রানা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল, টাঙ্গাইলের সমন্বিত পরিকল্পনায় জনাব মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া পিপিএম, অফিসার ইনচার্জ, টাঙ্গাইল সদর থানা, টাঙ্গাইল এর সার্বিক তত্বাবধানে জনাব হাবিবুর রহমান, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) এবং তদন্তকারী অফিসার এসআই(নিঃ) মোরাদুজ্জামান’সহ অন্যান্য অন্যান্য অফিসার ফোর্সের অংশগ্রহেন একাধিক টিম সাড়াশি অভিযান চালাতে থাকে। আভিযানিক দল ০৩(তিন) দিনের মধ্যে আসামী ১। মোঃ রাজু আহম্মেদ হাবলু (৩০), পিতা-মোঃ নূরু মিয়া, মাতা-মিনা বেগম, ২। মোঃ খোকন (৩১), পিতা-ঝন্টু বেপারী, মাতা-আনেছা বেগম, ৩। ওলি (৩০), পিতা-মৃত শহীদ বেপারী, মাতা-জোসনা, সর্ব গ্রাম- পাড় দিঘুলিয়া, থানা- টাঙ্গাইল সদর, জেলা -টাঙ্গাইলদেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। আসামীদের গ্রেফতারপূর্বক জিজ্ঞাসাবাদে জানায় নিহত আলী আকবর বাপ্পী (৩৮) দীর্ঘদিন যাবৎ পার্ক বাজারে খুচরা মাছ ক্রয়-বিক্রয় করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। পার্ক বাজারে দুইটি মাছের দোকান আসামী খোকন, ওলি ও নিহত বাপ্পি তিনজনের মধ্যে ভাগাভাগি নিয়া বিরোধ চলে আসছিল। উক্ত দোকান ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে আসামী মোঃ রাজু আহম্মেদ হাবলু, খোকন ও ওলি তিনজনে মিলে পরিকল্পনা করে, বাপ্পিকে মারপিট করে ভয় দেখিয়ে দুইটি দোকানকে তিন ভাগ করে তারা তিনজনে দোকান তিনটি নিয়ে নিবে। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২২/০৫/২০২৩ তারিখ অনুমান বিকাল অনুমান ০৩-০৪ ঘটিকার মধ্যে কালিপুরে খোকনের অটো গ্যারেজে আসামী মোঃ রাজু আহম্মেদ হাবলু, খোকন ও ওলি বসে বাপ্পিকে মেরে ফেলার (হত্যা করার) পরিকল্পনা করে। তাদের পরিকল্পনা মোতাবেক আসামী মোঃ রাজু আহম্মেদ হাবলু নিহত বাপ্পিকে রাত্রী অনুমান ১০.৩০ ঘটিকায় দিঘুলিয়া ব্রীজের পশ্চিমে দক্ষিন পার্শ্বে নদীর পাড়ে বটগাছের নিচে নিয়ে আসামী খোকন ও ওলি আসার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। একটি মেয়েলী বিষয়ে শালিসের ব্যাপারে লোক আসবে টাকা পয়সা নিয়ে এই লোভ দেখিয়ে নিহত বাপ্পিকে নিয়ে আসামী মোঃ রাজু আহম্মেদ হাবলু সময়ক্ষেপন করতে থাকে। গত ২৩/০৫/২০২৩ তারিখ রাত অনুমান ০১.০০ ঘটিকা থেকে ০১.৩০ ঘটিকার মধ্যবর্তী সময়ে আসামী খোকন ও ওলি তাদের হাতে থাকা ধারালো দা বটি সহ অন্যান্য অস্ত্র নিয়ে নিহত বাপ্পি এর কাছে এসে প্রথমে আসামী খোকন বাপ্পিকে বসা অবস্থায় পিছন দিক থেকে দা দিয়ে কোপ মারলে বাপ্পি উঠে রাস্তার দিকে দৌড় দিলে রাস্তার কোনায় বাপ্পি পিছলে পরে যায়, ঐ সময় আসামী মোঃ রাজু আহম্মেদ হাবলু, খোকন ও ওলি বাপ্পিকে ধাওয়া করে পিছনে দা বটি‘সহ অন্যান্য ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে মাতা, হাত ও পিঠের বিভিন্নস্থানে কুপিয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু নিশ্চিত করে আসামীরা বিভিন্ন দিকে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সার্বিক দিক-নিদের্শনায়, তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ও বিশ্বস্ত সোর্সের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এবং তদন্তকারী অফিসারের দক্ষতা ও পারদর্শিকতায় আসামীদের গ্রেফতারপূর্বক জিজ্ঞাসাবাদকালে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত একটি দা উদ্ধার করা হয় এবং সকল আসামী স্বেচ্ছায় দোষ স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে ফৌজদারী কার্ষবিধি আইনের ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে ।