
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হবেন- আইনের এমন বিধান সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। গতকাল বুধবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। এর আগে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি হাইকোর্ট রুল জারি করেছিলেন। আদালতে পৃথক রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কেসি, হাসান এম এস আজিম ও নিহাদুজ্জামান লিটন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস। পরে হাসান এম এস আজিম সাংবাদিকদের বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হবেন এবং তিনি পরিষদকে সাচিবিক সহায়তা দেবেন। এটা অবৈধ। চিঠিপত্রে উপেজলা প্রশাসন ব্যবহার করে, এখন আর উপজেলা প্রশাসন ব্যবহার করতে পারবেন না। উপজেলা পরিষদ ব্যবহার করতে হবে। ইউএনও সাচিবিক দায়িত্ব পালন করলেও সে উপজেলা পরিষদের কাছে জবাবদিহিতার মধ্যে থাকবে। ২০১০ সালে ১৭টি বিভাগ হস্তান্তরিত হয়েছিল তার মধ্যে উপজেলা পরিষদও হস্তান্তরিত হয়েছে। ইউএনও হস্তান্তরিত দায়িত্ব পালনের জন্য চার্টার অব ডিউটিজ আছে। সে এগেুলো করবে। এটার ওপরে এসে ৩৩ ধারায় তাকে একচ্ছত্র দেওয়া হয়েছে। হাইকোর্ট বলছে এটা বাতিল। একচ্ছত্র থাকতে পারবে না। ইউএনওকে উপজেলা পরিষদের অধীনে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, সাচিবিক দায়িত্বের সঙ্গে ওনাকে একচ্ছত্র আধিপত্য দেওয়া হয়েছে। মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এবং আর্থিক শৃংখলা প্রতিপালন ও সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। ৩৩ এর সব বিধান বাতিল। এখন ২০১০ সালের হস্তান্তরিত বিধান অনুসারে ইউএনও কাজ করবে। আইনের ৩৩ (১) ধারায় বলা হয়েছে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হবেন এবং তিনি পরিষদকে সাচিবিক সহায়তা দেবেন। (২) পরিষদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন, আর্থিক শৃংখলা প্রতিপালন এবং বিধি মাধ্যমে নির্ধারিত অন্যান্য কার্যাবলী পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা সম্পাদন করবেন। রুল জারির পরে আইনজীবী হাসান এম এস আজিম বলেছিলেন, উপজেলা পরিষদে একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি থাকা সত্ত্বেও একজন নির্বাহী কর্মকর্তাকে বেশি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এটা সাংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। উপজেলা পরিষদ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও দুমকী উপজেলা চেয়ারম্যান হারুন-অর-রশিদ ও অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মনোহরদী উপজেলা চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম খান, গাজীপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান রিনা পারভীন, কালিয়াকৈর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সেলিম আহম্মেদ ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রাশেদা আক্তার ২০২০ সালে ৭ ডিসেম্বর এ রিট করেন।