চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কুমিরা এলাকায় ইউনিটেক্সের তুলার গুদামে আগুন লাগার ঘটনায় দীর্ঘ ২৪ ঘন্টা ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী,
নৌবাহিনী,বিজিবি সহ সেচ্ছাসেবক দলের মোট ২৩ ইউনিট রাত-দিন কাজ করে সীতাকুণ্ড কুমিরা এলাকার ইউনিটেক্সের তুলার গুদামে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনতে সক্ষম হয়।
এখানে যুদ্ধটি ছিলো আগুনের সাথে নয়,পানির সাথে।আশে-পাশে ছিলোনা পুকুর- জলাশয় এতে করে উদ্ধার কর্মীদের পানির জোগান দিতে হয়েছে দূর দূরান্তর থেকে। আশে পাশে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত ছিলোনা কোন পুকুর তাই পর্যাপ্ত ফায়ার সরঞ্জাম ব্যবস্থা থাকার সত্ত্বের শুধু মাত্র পানির সংকটে দ্রুত সময়ে আগুন নেভানো সম্ভব হয়নি। সীতাকুণ্ডে এখন পুকুর পাওয়া দুষ্কর।পরিবেশ সম্মত পুকুর নেই বললেই চলে।পরিকল্পিত ভাবে ভরাট করে বিলুপ্ত করা হচ্ছে পুকুর- জলাসয়, ডোবা, খাল, ছড়া সহ ফসলি জমি।
সাম্প্রতিক সীতাকু্ণ্ড উপজেলার পন্হিছিলা এলাকার ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের পশ্চিম পাশে শত-শত বছরের পূরনো সাগর দীঘি নামে খ্যাত বিশাল পুকুরটি রাত-দিন ভরাটের কাজ চলছে প্রশাসনের নাকের ডগার উপর দিয়ে। সরেজমিন দেখা যায়, রাস্তার পাশে টিনের বেঁড়া দিয়ে ভেতরে চলছে প্রাকৃতিক পরিবেশ ধংসের বিশাল আয়োজন। পুকুরে প্রায় এক-চর্তুথাংশ ভরাট প্রায় সম্পূর্ণ। অনেকটা ওপেনসিক্রেটে চলছে এই পুকুর ভরাটের কাজ।
দিনরাত কর্মযজ্ঞ করে, রাতে অধাঁরে সমুদ্র থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করে শত শত ট্রাকে করে ফেলে ভরাট হচ্ছে পুকুর। একদিকে ট্রাকে বালু ফেলছে অন্যদিকে স্কেভেটর দিয়ে লেভেল করার কাজ চলছে।স্থানীয়রা জানান প্রায় ৩ একর ২৫ শতক এই পুকুর প্রাকৃতিক ও বাণিজ্যিক ভাবে মাছ উৎপাদনের উর্বর ক্ষেত্র ছিলো।বর্তমানে কারখানা মালিকদের লুলুপ দৃষ্টি পড়েছে এই পুকুরের উপর। শুধু পুকুর নয় আশে-পাশে ফসলি জমিও নষ্ট করা হচ্ছে বালি ভরাট করে। পুকুর ভরাটের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে কারখান মালিকদের পরিবেশ ধ্বংসের কর্মকাণ্ড । ভবিষৎতে এই এলাকায় তৈরি হবে অপরিকল্পিত শিল্পায়ন।ঝুঁকির মুখে পড়বে পরিবেশ। আমরা এলাকাবসীও চিন্তিত।পরিবেশের ক্ষতিকরে শিল্পায়ন,বিএমডিপো, সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টের মতো ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশ চাই না।
এবিষয়ে পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বদিউল আলম জসীমের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি জানান, এটি দীঘি বা পুকুর নয়, নালজমি। ভরাট করছে এস আলম গ্রুপ। দেখাশোনা করছি আমি। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বদিউল আলম জসীম সময় নিয়ে দেখানো কথা বলে, পরে তা দেখাতে পারেননি। তবে তিনি নাল জমি বললেও , সীতাকুণ্ড মৌজার , ১৭২০ নং খতিয়ানে, স্পষ্ট পুকুর লিখা রয়েছে।
এবিষয়ে সীতাকুণ্ড ফায়ারসার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা নূরল আলম দুলাল বলেন, সীতাকুণ্ড একটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এলাকা এখানকার বেশির ভাগ কারখানার ফায়ার সেপ্টি প্ল্যান নেই। তাই দূর্ঘটনা ঘটলে পানি সংকটে আমাদের হিমসিম খেতে হয়। নিয়ন্ত্রনে আনতে বেগ পেতে হয়। যার প্রমান সাম্প্রতিক ইউনিটেক্সর তুলার গুদাম। তাই পুকুর, জলাসয় ভরাট করা আইনআনুক অপরাধ। ভরাটকৃত স্থান পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
এবিষয়ে সীতাকুণ্ড উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন কে একাধিক বার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্ঠা করলেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।এবিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তের চট্রগ্রাম জেলার সহকারী পরিচালক আশরাফ উদ্দীন বলেন, আমরা আমরা এখনো কোন অভিযোগ পাইনি।খতিয়ান ও জায়গার ম্যাপ দেখে রিপোর্ট করবো।
দৈনিক নবচেতনার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন