কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বটতৈল ইউনিয়নের খাজানগরে কিশোর গ্যাং এর অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী।
দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে কিশোর গ্যাং এর অত্যাচার। খাজানগরে দিনে দুপুরে চলে চুরি, ছিনতাই। ব্যবসায়ী ও সাধারণ জনগণ যেন কিশোর গ্যাং এর কাছে জিম্মি। সন্ধ্যা পার হলেয় মাদকের রমরমা ব্যবসা ও সেবনের মহা উৎসব শুরু হয় কিশোর গ্যাং এর । এলাকায় চরম আতঙ্কে দিন পার করে সাধারণ জনগণ। এদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললেই নেমে আসে তার ওপর অমানুষিক অত্যাচার ও নির্যাতন।
গত ১ জানুয়ারি ২০২৩ এ কিশোর গ্যাং এর খপ্পরে পড়েছে শ্রমিকের সরদার আবু বক্কর। তিনি দীর্ঘদিন সুনামের সাথে বিভিন্ন রাইস মিলে শ্রমিক সরবরাহ দিয়ে থাকেন গত ১ জানুয়ারি২০২৩ এ দাদা রাইস মিলের শ্রমিকের
ইজিবাইক আটকে রাখে কিশোর গ্যাং।
এমন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আবু বক্কার পৌছালে তার যানবাহন কেড়ে নেয়। সেই সাথে তার কাছে থাকা নগদ অর্থ ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা কেড়ে নেয় এবং তাকে বেধর মারপিট করে। মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা।
সে প্রথমে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়। তার ২ হাত ভেঙে দেয়, বুকের খাচা ভেঙ্গে দেয় স্থানীয় জনগণ তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরে কুষ্টিয়া থেকে ঢাকা বাংলাদেশ ক্রিটিক্যাল কেয়ার এন্ড জেনারেল হাসপাতাল লিমিটেড রেফার্ড করেন। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন।
এ ঘটনায় গত ২ জানুয়ারি ২০২৩ এ কুষ্টিয়া মডেল থানায় ১৯ জন কে আসামি করে এজাহার জমা দেয়া হয়। ঘটনার ২০ দিন পেরিয়ে গেলেও ভুক্তভোগীরা এখনো পর্যন্ত কোন আইনি সহায়তা পায়নাই। কিশোর গ্যাং এর মূলহোতারা বুক টান টান করে দাবিয়ে বেড়াচ্ছে এলাকায়।
ভুক্তভোগীরা জানান এই কিশোর গ্যাং পরিচালনা করে থাকেন লাল মিয়ার ছেলে আজাদ @আজাদ কসাই নামে এলাকায় পরিচিত। তার ছত্রছায়ায় এলাকায় গড়ে উঠেছে কিশোর গ্যাং। তার সেকেন্ড এন্ড কমান্ড বারেকের ছেলে জুয়েল, মোহরের ছেলে আসলাম ও তার ছোট ভাই জব্বার, শহিদুলের ছেলে শান্ত, মনু শেখের ছেলে শাহীন, সুবহানের ছেলে মিন্টু, শামসুলের ছেলে সানোয়ার, সামাদের ছেলে ফারুক, লাল মিয়ার ছেলে রিপন, এ ছাড়া আরো অনেকে আছে তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে অনেক তথ্য।
ভুক্তভোগীরা বলেন, কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা এখনো আমার বাড়ির আশেপাশে ও আমার পরিবারের সদস্যদের উপরে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে এবং বলছে ক্ষমতা থাকলে কিছু করে দেখাস। আমাদের বিরুদ্ধে কোন মামলা মোকাদ্দমা হলে তোকে ও তোর পরিবারের কাউকে বাঁচতে দিব না। এখনো পর্যন্ত আমাকে কিশোর গ্যাং এর বিরুদ্ধে এখনই যদি ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হয় তাহলে সামনে আরো ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারি এরা। আর আমাকে যারা হত্তার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করেছে তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে বটতৈল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিন্টু ফকিরের সাথে কথা হলে তিনি বলেন আমি উনাকে দেখতে গিয়েছিলাম এবং বিষয়টি আমার নজরে আছে। তাদেরকে আইনগতভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করার পরামর্শ দিয়ে এসেছি। এমন অমানবিক ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।
তার বাড়ির আশেপাশে যেয়ে যারা হুমকি ধামকি দিচ্ছে এমন খবর আমিও পেয়েছি তাদেরকে বলেছি যারা এমনটি করছে তাদেরকে ধরে আমাদেরকে খবর দেয়ার জন্য।