হেফাজতে ইসলামের পুরো কমিটিকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার (২৫ এপ্রিল) রাতে এক ভিডিও বার্তায় এই সংগঠনের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী এই ঘোষণা দেন।
বাবুনগরী ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘হেফাজতের সব নেতা ও তৌহিদি জনতা সবাইকে সালাম। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে বড় দিনি ও অরাজনৈতিক সংগঠন, ঈমান আকিদার সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির কিছু গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের পরামর্শে কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো। আগামীতে আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে আবারও হেফাজতে ইসলামের কার্যক্রম শুরু হবে।’
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের মার্চ মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ করে হেফাজত।
এছাড়া, গত ৩ এপ্রিল হেফাজতের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক নারীসহ নারায়ণগঞ্জের রয়্যাল রিসোর্টে জনগণের তোপের মুখে পড়েন। পরে তাকে রাতে সেখান থেকে ছিনিয়ে নেন তার ভক্ত-সমর্থকরা। এরপর রিসোর্টসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও ব্যাপক ভাঙচুর চালায়।
এসব ঘটনার পর হেফাজতের নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার অভিযান চলছে। বিক্ষোভ–সহিংসতার ঘটনায় দেশের বিভিন্ন জেলায় হেফাজতের নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা বিভিন্ন মামলায় ৬৯ হাজারের বেশি জনকে আসামি করা হয়েছে।
এদিকে, ১৯ এপ্রিল মধ্যরাতে হেফাজতের একটি প্রতিনিধি দল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে তার বাসভবনে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে তারা কাউকে হয়রানি ও ঢালাওভাবে গ্রেপ্তার না করার দাবি জানান।
ওই বৈঠকের পর রোববার বিকেলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ‘আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি’আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’-এর পক্ষ থেকে কওমি মাদ্রাসার ছাত্র ও শিক্ষকদের সব ধরনের রাজনীতি থেকে মুক্ত থাকার ঘোষণা দেওয়া হয়। যাত্রাবাড়ির একটি মাদ্রাসায় আল-হাইআতুলের স্থায়ী কমিটির সভায় ছাত্র-শিক্ষকদের রাজনীতির বাইরে থাকার ওই সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া. তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে গিয়ে এই সিদ্ধান্ত জানাবেন বলেও ঠিক হয়।
এরপর রোববার রাতে হঠাৎ করেই হেফাজতে ইসলামের কমিটি বিলুপ্তির এই ঘোষণা দিলেন হেফাজত আমির জুনায়েদ বাবুনগরী।