নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই বগুড়ার ধুনট উপজেলায় সিএনজিচালিত তিন চাকার অটোরিকশায় অবাধে ব্যবহৃত হচ্ছে বাসা-বাড়িতে রান্না করার এলপি গ্যাস। এতে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন সাধারণ মানুষ। সরেজমিন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন অটোরিকশা স্ট্যান্ড ঘুরে এ সব চিত্র চোখে পড়ে। একটি পাইপ নিয়ে এলপিজি সিলিন্ডারের মুখে ভাল্ব লাগানো ক্যাপ এঁটে সিলিন্ডার উল্টে দেওয়া হলো। তার পরে সেই পাইপের সাথে সিএনজি সিলিন্ডারে একইভাবে ক্যাপ লাগিয়ে দেওয়া হল। এসময় এলপিজি সিলিন্ডারের ক্যাপ খুলে দেওয়ার সাথে সাথে নিমেষেই এলপি ভরে গেল সিএনজি সিলিন্ডারে। এসব সিলিন্ডার চালকের সিটের নিচে এবং যাত্রী সিটের পেছনে ক্যারিয়ারে উন্মুক্তভাবে রাখা হয়েছে। এ জাতীয় পরিবহনে সিএনজি সিলিন্ডার ব্যবহারের অনুমতি থাকলেও এলপি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারের অনুমতি নেই। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এভাবে ঝুঁকি নিয়েই চলছে বেআইনি কারবার। রান্নার জন্য ব্যবহৃত এলপিজিতে থাকে মূলত প্রোপেন বা বুটেন। সহজে বাতাসে মিশতে চায় না এই গ্যাস। তার ওপর সামান্য বাতাসের সংস্পর্শে জ্বলতে সক্ষম এই গ্যাস। অনেক সময় উঁচু নিচু রাস্তায় ঝাঁকির কারণে সিলেন্ডারের মুখে ব্যবহৃত রেগুলেটর মিসিং হতে পারে। সিলিন্ডারের মুখের রেগুলেটর মিসিং হলে গ্যাস লিকেজ হলে সেক্ষেত্রে অগ্নিকাণ্ডের আশঙ্কা থাকে। অটোরিকশার সিলিন্ডার প্রকারভেদে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকায় কিনতে হয়। এতে গ্যাস রি-ফিলিং করলে এক চতুর্থাংশ বাতাস থাকলেও সিলিন্ডারটি নিরাপদ থাকে। এলপি গ্যাস সিলিন্ডার যত্রতত্র ৭৫০ টাকাতেই কেনা যায় তাতে বাতাসের পরিমাণ থাকে না। কিন্তু সিলিন্ডার কোনোক্রমেই নিরাপদ নয়। এলপি গ্যাস সহজলভ্যতার কারণেই এর ব্যবহার দিনদিন বেড়েই চলছে আর যাত্রীদের জীবনের ঝুঁকিও বাড়ছে।এ উপজেলায় ধুনট শহরসহ প্রত্যন্ত এলাকায় কমপক্ষে ১০টি সিএনজিচালিত অটোরিকশার স্ট্যান্ড রয়েছে। এসব স্ট্যান্ড থেকে দৈনিক প্রায় ৫০০ অটোরিকশা বিভিন্ন সড়কে যাত্রী পরিবহন করে। ধুনট শহর থেকে সিএনজি পাম্প স্টেশন প্রায় ৪০ কিলোমিটার দুরে। ধুনট থেকে মহাসড়ক হয়ে সেই পাম্প স্টেশনে গিয়ে সিএনজির সিলেন্ডারে গ্যাস ভরতে হয়।সিএনজিচালকরা বলছেন, গ্যাসের সিলিন্ডার ভরতে বগুড়ায় যাতায়াত করতে মহাসড়কে পুলিশের হয়রানির পাশাপাশি নামে বেনামে বিভিন্ন সংগঠনকে চাঁদা দিতে হয়। বাধ্য হয়ে তারা বাসা বাড়িতে ব্যবহৃত এলপি গ্যাস দিয়েই গাড়ি চালাচ্ছেন। ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্জয় কুমার মহন্ত বলেন, এ ধরনের ঘটনার কথা কেউ আমাকে বলেননি। আপনার কাছেই প্রথম শুনলাম। এ বিষয়টি মোবাইল কোর্টের আওতাভুক্ত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।