![Daily Nabochatona](https://dailynabochatona.com/wp-content/uploads/2023/01/31BwAd3.png)
ফরিদপুরের অদম্য মেধাবী সাদিয়া আক্তার এ বছর ফরিদপুর সদরের চরমাধবদিয়া ইউনাইটেড উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ পাঁচ পেয়ে এসএসসি পাশ করেছে। ওই বিদ্যালয় থেকে চলতি বছর জিপিএ পাঁচ পেয়েছে চারজন। চারজনই মেয়ে। তাদেরই একজন সাদিয়া। সাদিয়া ফরিদপুর সদরের চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের ইয়াছিন শেখের ডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ ও রিনা বেগমের মেয়ে। দুই বোন ও এক ভায়ের মধ্যে সে বড়। তার বাবা একজন দিন মজুর। অস্টম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণিতে উঠার পর বাবা পারিবারিক আর্থিক সংকটের কথা ভেবে মানবিক বিভাগে পড়ার পরামর্শ দেন সাদিয়াকে । কিন্তু সাদিয়ার ইচ্ছে চিকিৎসক হওয়ার। মানবিক বিভাগে পড়লে সে সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাবে। তাই বাবার অমতে মায়ের ইচ্ছায় বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশুনা করা শুরু করে সাদিয়া। সাদিয়ার মা এলাকায় দর্জির কাজ শুরু করেন মেয়ের পাড়াশোনার খরচ যোগান দিতে। সাদিয়াও পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে দর্জির কাজ শুরু করেন। এভাবে বহুকষ্টে পড়াশোনা চালিয়ে সাদিয়া এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ পাঁচ পেয়ে পাশ করে। সাদিয়ার মা রিনা বেগম জানান, মেয়ের ইচ্ছে চিকিৎসক হওয়ার। বাবা দিন মজুর। তার পক্ষে এ ব্যয়ভার বহন করা কষ্টসাধ্য। তাই তিনি দর্জির কাজ শুরু করেন। তিনি বলেন ফরম পূরণের সময় স্কুল থেকে জানানো হয় পাঁচ হাজার টাকা দিতে হবে। এতো টাকা দেওয়া তাদের মত পরিবারের পক্ষে কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। ওর বাবা এ কথা শুনে এ টাকা যোগার করা তার পক্ষে সম্ভব না। স্কুলে যোগাযোগ করা হলেও তারা টাকা কমাতে অস্বীকার করে। শেষ পর্যন্ত বাড়ির একটি ছাগল ছিল, সেটা বিক্রি করে ফরম পূরনের টাকা পরিশোধ করতে হয়। স্কুল একটি টাকাও কম নেয়নি ফরম পূরণের টাকার। সাদিয়া জানায়, উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগে অনেক খরচ, অনেক স্যারের কাছে পড়তে হবে। সে টাকা আমাকে কে দেবে। চিকিৎসক হওয়ার শখ আমার ছোটবেলা থেকে। জানিনা আগামিতে কিভাবে চলবে আমার লেখাপড়ার খরচ। চরমাধবদিয়া ইউনাইটেড উচ্চ বিদ্যালয়ের মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, সাদিয়া একজন মেধাবী শিক্ষার্থী। পড়ালেখা সে অত্যন্ত মনোযোগী। এ ধরনের শিক্ষার্থীর পক্ষে লেখাপড়া করে যে কোন সাফল্য অর্জন করা সম্ভব। তবে আর্থিক ভাবে পরিবারটি খুবই দুর্বল। কোন প্রতিষ্ঠান কিংবা বিদ্যুৎসায়ী কোন ব্যক্তির সহযোগিতা পেলে তার স্বপ্ন পূরণ হতে পারে।