ফরিদপুরের মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনায় এবার এতিম হয়ে গেলেন ১৮ মাস বয়সের শিশু ইয়াসিন শেখ। দূর্ঘটনার পর প্রায় ২০ ঘন্টা ধরে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়াই করে মঙ্গলবার রাতে মারা যান মা পপি বেগম (২৫)। এর আগে দূর্ঘটনায় গুরুত্বর আহত হয়ে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর, অবস্থার অবনতি হওয়ায় ঢাকায় নেয়ার পথি মধ্যে মঙ্গলবার দুপুরে মারা যান বাবা ইকবাল শেখ। তাদের বাড়ি আলফাডাঙ্গা পৌরসভার ০১ নং ওয়ার্ডের হিদাডাঙ্গায়। নিহত পপি বেগমের লাশ বুধবার দুপুরে দাফন করা হয়েছে হিদাডাঙ্গায়। স্থানীয়রা জানান, দূর্ঘটনার সময় ওই পিকআপে শিশুটিও ছিলো, বাবা মা দুজনেই এ দূর্ঘটনায় মারা গেলেও সড়কের উপরে ছিটকে পড়েও বেঁেচ গেছে শিশুটি। ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কয়েক ঘন্টা চিকিৎসা দেবার পর সুস্থ হয় শিশুটি। শিশুটির স্বজন ও এলাকাবাসী জানান, বাবা মাকে হারিয়ে চিৎকার চেচামেচি করে কাঁদছে শিশুটি। মা-বাবাকে হারিয়ে সে নি:স্ব। তারা জানান, পপি ও ইকবালের গত তিন বছর আগে বিয়ে হয়। তাদের একমাত্র শিশু সন্তান ১৮ মাস বয়সের ইয়াসিন শেখ। আলফাডাঙ্গা পৌরসভার ০১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৈয়দ রোমান আলী জানান, এই মুহুর্তে বয়োবৃদ্ধ নানী ও নানার দ্বায়িত্বে রয়েছে শিশুটি। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ফরিদপুরের কানাইপুরের দিকনগর এলাকায় সাতক্ষিরা গামী ইউনিক পরিবহনের একটি বাসের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় আলফাডাঙ্গা থেকে ফরিদপুরের দিকে ছেড়ে আসা পিকআপের। এতে পিকআপে থাকা ১৯ জনের মধ্যে ১১ জন ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে হাসপাতালে নেয়ার পরে আরো চারজনের মৃত্যু হয়। নিহত ১৫ জনের মধ্যে আট জন নারী, চার জন পুরুষ ও তিন জন শিশু রয়েছে। এদিকে ফরিদপুরের এ সড়ক দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্য সংখ্যা ৫ জন থেকে বাড়িয়ে ৭ সদস্য বিশিষ্ট করা হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের দাফনের জন্য প্রত্যেককে তাৎক্ষণিক ২০ হাজার টাকা এবং আহতদের চিকিৎসার জন্য ১০ হাজার টাকা করে প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিটি নিহত সদস্যর পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা আর আহতদের তিন লক্ষ টাকা করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহ্সান তালুকদার।