শস্যভাণ্ডার খ্যাত উত্তরের জেলা নওগাঁর মান্দা, নিয়ামতপুর, পোরশা ও মহাদেবপুর উপজেলা। এই উপজেলা গুলোতে সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি মোকামে প্রকারভেদে প্রতি কেজিতে ২-৩ টাকা বেড়েছে। তবে খুচরা চাল বাজারে চাল দাম বাড়ার কোন প্রভাব পড়েনি। চালের দাম বাড়ায় ভোক্তাদের মাঝে অস্থিরতা বিরাজ করছে। বাজার মনিটরিংয়ের দাবি জানান ভোক্তারা। প্রতি বছর এই সময়ে ধান এবং চালের বাজার ঊর্ধ্বগতি হয়। আমন মৌসুমে ধান কাটা-মাড়াই অনেক আগেই শেষ হয়েছে। বড় জোতদার কৃষকদের ঘরে কিছু ধান রয়েছে। হাটবাজারে ধানের সরবরাহ কম হওয়ায় প্রতি মণ ধানে বেড়েছে ১০০ টাকা। স্বর্ণা-৫ জাতের ধান বিক্রি হচ্ছে মনে ১ হাজার ৩৬০ টাকা থেকে ১ হাজার ৩৮০ টাকা। ধানের দাম বাড়ার অজুহাতে এর প্রভাব পড়েছে চালের বাজারেও। পাইকারি মোকামে প্রকারভেদে প্রতি বস্তায় (৫০ কেজি) দাম বেড়েছে ১০০-১৫০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রকারভেদে প্রতিকেজিতে ২-৩ টাকা বেড়ে স্বর্ণা-৫ চাল ৪৮-৫০ টাকা কেজি, জিরাশাইল ৬২-৬৪ টাকা এবং কাটারিভোগ ৬৬-৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে খুচরা বাজারে চাল দাম বাড়ার কোন প্রভাব পড়েনি। অর্থাৎ পাইকারি এবং খুচরা বাজারে একই দরে চাল বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, খুচরা বাজারে বেচাকেনা নেই বললেই চলে। ক্রেতা একেবারে শূন্য। অনেক ব্যবসায়ীর বনি হচ্ছে না। ক্রেতা সংকট হওয়ার কারণ হিসেবে সরকারি খাদ্য বান্ধব কর্মসূচী (ওএমএস-টিসিবি) তে স্বল্প মূল্যে চাল বিক্রি হচ্ছে। এতে নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা সেখান থেকে কম দামে চাল ও আটা পাওয়ায় তারা খুচরা বাজারে তেমন একটা আসছে না। এ কারণে খুচরা বাজারে ক্রেতা শূন্য। মান্দার দেলুয়াবাড়ি খুচরা বাজারের চাল বিক্রেতা মানিক বলেন, বাজারে প্রায় ক্রেতা শূন্য। সরকারি খাদ্য-বান্ধব চালু হওয়ায় অনেক ক্রেতা সেখান থেকে চাল ও আটা কিনছে। আমাদের বেচাকেনা প্রায় শূন্য। নওগাঁ পৌর খুচরা বাজারের সাধারণ সম্পাদক উত্তম সরকার বলেন, পাইকারিতে চালের দাম বাড়লেও খুচরা বাজারে এখনো চালের দাম বাড়েনি। আমরা আগের দামেই চাল বিক্রি করছি। আমাদের কাছে যেসব চাল আছে তা অবিক্রিত। এসব চাল বিক্রি হলে পাইকারি মোকাম থেকে চাল কেনা হবে। সেসব চাল বাজারে আসলে কিছুটা দাম বাড়বে। নওগাঁ চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার বলেন, প্রতি বছর এ মৌসুমে ধান-চালের দাম কিছুটা বাড়ে। ধানের দাম মনে ১০০ টাকা বেড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে চালের বাজারে। প্রতি বস্তায় ১০০-১৫০ টাকা বেড়েছে। যেহেতু বর্তমানে ইরি-বোরো ধান রোপণ চলমান রয়েছে। কিছু ধান ব্রুডিং অবস্থায় এবং কিছু ধান পাকার অপেক্ষায় রয়েছে। ধান কাটা-মাড়াই শুরু হতে প্রায় দেড় মাস। নতুন ধান বাজারে এলে চালের দাম স্বাভাবিক হবে বলে জানান তিনি।