ঢাকার ধামরাইয়ে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে খননযন্ত্র (এক্সকেভেটর) দিয়ে ফসলি জমির মাটি কেটে ইটভাটায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। জমির উপরের অংশ অর্থাৎ টপ সয়েল ইটভাটায় যাওয়ায় জমির উর্বরতা হারাচ্ছে। দ্রুত ইটভাটার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না নিলে আগামীতে খাদ্য ঘাটতিসহ ফসলি জমি হুমকির মুখে পড়বে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৩ বলছে, আবাসিক এলাকা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার ও ফসলি জমির এক কিলোমিটারের মধ্যে ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। এ ছাড়া কোনো সড়ক ও মহাসড়ক থেকে অর্ধকিলোমিটার দূরত্বে ইটভাটা স্থাপন করতে হবে। কিন্তু ধামরাইয়ের প্রায় সব ইটভাটা আবাসিক এলাকায় গড়ে উঠেছে। সরজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের শতাধিক জায়গার মাটি কেটে ইট ভাটায় নেয়া হচ্ছে। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে চলছে রমরমা মাটির ব্যবসা। ইটভাটার কালো ধোয়া আর ধুলার জন্য নষ্ট হয়ে গেছে ভুট্টার ফলন। পাশের জমির মাটি কেটে ফেলায় ভেঙে যাচ্ছে অন্য জমি। এতে বাধ্য হয়ে অন্যরা মাটি বিক্রি করছেন। ফসলি জমি পুকুরে রূপান্তরিত হচ্ছে। ধামরাই উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলার ১৬টি ইউনিয়নে প্রায় দুই শতাধিক ইটভাটা রয়েছে। যার অধিকাংশেরই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। ইট তৈরির প্রধান কাঁচামাল মাটি। ফসলি জমির মাটি ইট তৈরিতে সুবিধা। এছাড়া হাতের নাগালে হওয়ায় কৃষকদের বিভিন্নভাবে বুঝিয়ে এ মাটি কিনে নেয় একটি পক্ষ। এরপর তারা বেশি দামে ইটভাটায় সরবরাহ করেন, সরবরাহ কারিরা হলেন, বালিয়া ইউনিয়নে মাদারপুর গ্রামে কহিনুর ইসলাম, কাওয়ালী পাড়া, নবগ্রামে আহাম্মদ হোসেন মোঃ ইমতিয়াজ হোসেন জালসা গ্রামে মো হুমায়ুন কবির ও তাহার ভাই সোলাইমান, ভাড়ারিয়া ইউনিয়নে মোঃ আনোয়ার হোসেন (ভানু) আমতলা বাজারের মোঃ নাসির উদ্দিন (ওরফে কালা নাসির) নান্নার ইউনিয়নে সাদ্দাম হোসেন, সাইফুল ইসলাম শাহজাহান মিয়াও সুতিপাড়া ইউনিয়নের সিন্ধুলীয়া গ্রামে এম এ বি ব্রিকস এর মালিক সাইফুল ইসলাম সহ আরো অনেকেই নামে বে নামে তিন ফসলি জমির মাটি কেটে নিতেছে, আর এভাবে ফসলি জমির মাটি ইটভাটায় যেতে থাকলে আস্তে আস্তে ফসল উৎপাদন কমে যাবে,এতে খাদ্যের সরবরাহ অভাব হতে পারে। তবে এলাকাবাসীর দাবি, প্রশাসন সঠিকভাবে নজরদারি করলে এবং অবৈধ ইটভাটা পুরোপুরি বন্ধ করে দিলে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব। একদিকে ফসলি জমি নষ্ট হচ্ছে অন্যদিকে এই উপজেলায় অবৈধ মাহিন্ডা ও ড্রাম ট্রাক দিয়ে মাটি ইট ভাটায় নিয়ে যাওয়ার কারনে রাস্তায় কাদা মাটি পরে পিছ ডালাই রাস্তা নষ্ট হয়ে গেছে। একটু বৃষ্টি হলে যে কোন সময় ঘটতে পারে মারাত্মক দূর্ঘটনা। কম বয়সের আরোহী দিয়ে গাড়ি চালোনো হয়। এবং তাদের গাড়ি চালানো কোন লাইসেন্স নেই। দুইশতাদিক ভাটার মাটি গাড়ি ইট ভাটায় নিয়ে ফলে রাস্তায় ধুলা আর বালুর ভোগান্তি পোহাতে হয় সাধারণ যাত্রী থেকে শুরু করে আসে পাশে বাড়ি এবং সকল শিক্ষার্থীদের। এই উপজেলায় দুইশতাদিক ইটভাটা থাকায় যেমনি পরিবেশ রয়েছে হুমকির মুখে তেমনি হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, ফুসফুস ক্যান্সার, কিডনি রোগসহ অন্যান্য রোগের প্রকোপ বাড়তে পারে। ধামরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আরিফ হাসান বলেন, ঢাকা জেলার মধ্যে ধামরাই উপজেলায় শস্য ভান্ডার হিসেবে পরিচিত, ধামরাই উপজেলার মাটি হচ্ছে, এমন মাটি,যে কোন সময় ফসল লাগালে হয়ে যায়, ফসলী জমির মাটি যুদি কেউ কেটে নেয় এটা সম্পন্ন অবৈধ এবং অনিয়মের মধ্যে পরে। তিনি আরো বলেন, তিন ফসলির মাটি কাটতে হলে প্রশাসক মহোদয়ের কাছে অনুমতি নিতে হবে। তবে আমাদের কাছে কৈউ যুদি লিখিত অভিযোগ করে তাহলে আমরা সাথে সাথে আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে থাকি।