পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনার চতুর্থ দিনে আরো একজনের লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৯ জনে। তবে এখনো আরো ৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে দাবি স্বজনদের।
উদ্ধার হওয়া হিমালয় চন্দ্র রায় জেলার বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউপির খালপাড়া এলাকার বিরেন চন্দ্রের ছেলে। তিনি গত রোববার তার নববধূকে সঙ্গে নিয়ে নিখোঁজ হন।
এদিকে বুধবার ভোর ৫টা থেকে করতোয়া নদীর আউলিয়াঘাটসহ বিভিন্ন নদীর বিভিন্ন এলাকায় চতুর্থ দিনের মতো উদ্ধার কাজে নেমে পঞ্চগড় ফায়ার সার্ভিসের কয়েক ইউনিট। দিনভর উদ্ধার কাজ পরিচালনা করে বিকেলের দিকে ঘটনাস্থলে থেকে কয়েক গজ দূর থেকে লাশটি উদ্ধার করে। এ ঘটনা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এদিকে নিহত ৬৯ জনের মধ্যে নারী ৩১, পুরুষ ১৮ ও শিশু ২১ জন। তবে এখনো দুই পুরুষ ও এক শিশুসহ তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।
নিহতের মধ্যে ৪৫ জনের বাড়ি জেলার বোদা উপজেলায়, দেবীগঞ্জে উপজেলায় ১৮, আটোয়ারী ২, ঠাকুরগাঁও সদর ৩, পঞ্চগড় সদরে ১ জন।
ভয়াবহ এ দুর্ঘটনায় এখনও নিখোঁজ চার জনকে উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রেখেছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। তবে রাত হওয়ায় বুধবারের উদ্ধার কাজ সমাপ্তি করেছেন তারা। আগামীকাল ভোর থেকে উদ্ধার কাজ আবোরো শুরু করবেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।
গত রোববার শারদীয় দূর্গোৎসবের মহালয়া উপলক্ষে দুপুরে আউলিয়া ঘাট থেকে একটি শ্যালো ইঞ্জিনচালিত নৌকায় বড়শশী ইউনিয়নের বদেশ্বরী মন্দিরের দিকে যাচ্ছিলেন তারা। ঘাট থেকে নৌকাটি কিছু দূর যাওয়ার পরই ডুবে যায়।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বোদা উপজেলার মাড়েয়া ইউপির করতোয়া নদীর অপরপাড়ে বদেশ্বরী মন্দিরে মহালয়া পূজা উপলক্ষে প্রতিবছরের ন্যায় এবারো ধর্মসভার আয়োজন করা হয়। রোববার দুপুরের দিকে মূলত ওই ধর্মসভায় যোগ দিতে সনাতন ধর্মালম্বীরা নৌকায় নদী পার হচ্ছিলেন। তবে ৫০ থেকে ৬০ জনের ধারণ ক্ষমতার নৌকাটিতে শতাধিক যাত্রী ছিল। অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে নদীর মাঝপথে নৌকাটি ডুবে যায়। অনেকে সাঁতার জানায় তীরে আসতে পারলেও সাঁতার না জানা বিশেষ করে নারী ও শিশুরা পানিতে ডুবে যায়। মনে করা হচ্ছে স্রোতের কারণে অনেক মরদেহ পানিতে ভেসে যেতে পারে।
পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দীপঙ্কর রায় জানান, নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে মরদেহ সৎকারের জন্য ২০ হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে।