রাজধানীর বনানীর এফ আর টাওয়ার নির্মাণে ইমারত বিধিমালা লঙ্ঘন এবং নকশা জালিয়াতির মাধ্যমে ১৮ তলা পর্যন্ত বাড়ানোর অভিযোগে ভবন মালিক ও নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রূপায়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খান মুকুলসহ চার জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। এর মধ্য দিয়ে এ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো।
সোমবার ঢাকার বিভাগীয় স্পেশাল জজ কামাল হোসেন আসামিদের অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে অভিযোগ গঠন করেন। একইসঙ্গে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ১৫ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত।
মামলার অপর আসামিরা হলেন-রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন খাদেম, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ইজারা গ্রহীতা সৈয়দ মো. হোসাইন ইমাম ফারুক (এস এম এইচ আই ফারুক) ও রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক প্রধান প্রকৌশলি সাইদুর রহমান।
২০১৯ সালের ২৯ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও দুদকের উপপরিচালক আবু বকর সিদ্দিক পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। এর আগে ২০১৮ সালের ২৫ জুন উপপরিচালক মো. আবুবকর সিদ্দিক বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। যেখানে দণ্ডবিধির চারটি ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন-১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। গত ২৮ মার্চ এফআর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ২৭ জন নিহত হওয়ার পর এই ভবন নির্মাণে নানা অনিয়মের বিষয়গুলো বেরিয়ে আসতে থাকে।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ইমারত বিধিমালা লঙ্ঘন এবং নকশা জালিয়াতির মাধ্যমে ১৮ তলাবিশিষ্ট এফ আর টাওয়ার নির্মাণ করেন। ১৯৯০ সালে ১৫ তলা ভবন নির্মাণের জন্য রাজউকের অনুমোদন পান এস এম এইচ আই ফারুক। পরে ১৯৯৬ সালে ১৮ তলা ভবন নির্মাণের অনুমোদন চেয়ে সংশোধিত নকশা অনুমোদনের জন্য আবেদন করেন তিনি। সংশোধিত নকশা ইমারত বিধিমালা অনুযায়ী না হওয়া এবং প্রস্তাবিত ভবনের উচ্চতা বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের বিধিনিষেধ অনুযায়ী অনুমোদনযোগ্য নয় বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। এর এক মাসের মধ্যেই সংশোধিত ও নকশা অনুমোদন করা হয়। এ কাজে অবৈধ লেনদেন হয়েছে বলে অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে। পরে ১৮ তলা ভবন নির্মাণের জন্য জমির মালিক চুক্তিবদ্ধ হন আবাসন প্রতিষ্ঠান রূপায়ন গ্রুপের সঙ্গে।
রূপায়ন ওই জায়গায় অবৈধ নকশার ভিত্তিতেই ১৮ তলা ভবন নির্মাণ করে। ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অনুসারে ভবনের দুই পাশে যে পরিমাণ জায়গা রাখার কথা তা–ও রাখা হয়নি। পার্কিয়ের জায়গার ক্ষেত্রেও রাখা হয়েছে প্রায় নির্দিষ্ট পরিমাণের এক–তৃতীয়াংশ জায়গা। আবাসিক ভবন হিসেবে অনুমোদন নেওয়া হলেও পুরো ভবনটি ব্যবহার হয়েছে বাণিজ্যিক হিসেবে।