সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি ‘প্রত্যয়’ চালুর প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার দাবিতে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালনকারী শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সকালে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

বুধবার (৩ জুলাই) বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভুঁইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আজ সন্ধ্যায় ওবায়দুল কাদের আমাদের সঙ্গে মিটিংয়ের সময় দিয়েছিলেন। কিন্তু পরে সেটি তিনি আগামীকাল সকালে ঠিক করেছেন। আমরা শিক্ষক নেতারা তার সঙ্গে দেখা করে আমাদের দাবি তুলে ধরব। আমাদের দাবি মেনে নেয়া হলে আমরা কর্মবিরতির আন্দোলন থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করব, অন্যথায় আমাদের আন্দোলন চলবে।

প্রসঙ্গত, সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত ‘বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন’ প্রত্যাহার এবং পূর্বের পেনশন স্কিম চালু রাখার দাবিতে গত ২০ মে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। তার ধারাবাহিকতায় ২৬ মে বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের ৩৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে মানববন্ধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এরপর ২৮ মে দুই ঘণ্টা এবং ২৫-২৭ জুন তিনদিন সারাদেশে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করা হয়। পরে গত ৩০ জুন পূর্ণ কর্মবিরতি পালন করা হয় এবং ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি শুরু হয়।

আন্দোলনরত শিক্ষকদের অভিযোগ তাদের দাবির তোয়াক্কা না করেই সরকারের নির্দেশ কার্যকর করতে যাচ্ছে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এই স্কিমে অন্তর্ভুক্ত করা ‘অসম্মানের’। ১ জুলাইয়ের পর থেকে যে শিক্ষকরা কাজে যোগ দেবেন; তারা এই স্কিমের আওতায় আসবেন। চাকরি শেষে দেয়ার জন্য বেতন থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা কেটে নেয়া হবে। এটাই যদি নিয়ম হয়, তবে তা প্রশাসনের কোনো বাহিনীর জন্য করা হলো না কেন- এই প্রশ্ন তাদের।

এদিকে শিক্ষকদের চলমান এই আন্দোলনের মধ্যেই ‘প্রত্যয়’ স্কিম নিয়ে ব্যাখ্যা দিল অর্থ মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে কথা বলেছেন স্বয়ং অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীও। ‘প্রত্যয়’ স্কিম বাতিলের দাবিতে শিক্ষকরা যে আন্দোলন করছেন, তাকে অযৌক্তিক বলছেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার অর্থমন্ত্রী এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) দক্ষিণ, মধ্য ও পশ্চিম এশিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট ইয়াংমিং ইয়ংয়ের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘প্রত্যয়’ স্কিম নিয়ে শিক্ষকদের আন্দোলনের কোনো যুক্তি আমি খুঁজে পাচ্ছি না। পেনশনের ‘প্রত্যয়’ স্কিম বাতিলের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আন্দোলন অযৌক্তিক।