ফরিদপুর সদরের পদ্মা নদী অধ্যুষিত চরএলাকায় রাসেল ভাইপার সাপের তীব্র আতংক বিরাজ করছে। কৃষকরা ক্ষেত থেকে ফসল তুলতে পারছে না। সাপের ভয়ে ফসল তোলার জন্য পাওয়া যাচ্ছে না দিন মজুর। জনমনে আতংকের পাশাপাশি ফরিদপুরের মুল ভুখন্ডসহ পদ্মা নদীর চর এলাকায় রাসেল ভাইপার পিটিয়ে হত্যার ঘটনাও ঘটছে। ফরিদপুর সদরের নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নটির বেশির ভাগ অংশ পদ্মা নদীর চর এলাকায় অবস্থিত। প্রায় প্রতিদিনই চর এলাকায় রাসেল ভাইপার পিটিয়ে মারছে এলাকাবাসী। এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ওই ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোফাজ্জেল হোসেন গতকাল জানান, নদীতে পানি বাড়ছে। এখন বাদাম তুলতে ব্যস্ত কৃষকরা। কিন্তু এ কাজে কোন দিন মজুর পাওয়া যাচ্ছে না। রাসেল ভাইপারের ভয়ে কেউ কাজ করতে আগ্রহী হচ্ছে না। তিনি বলেন, রাসেল ভাইপার সাপ তার ইউনিয়নের সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে। এলাকাবাসী লাঠি হাতে নিয়ে চলাফেরা করছে। কৃষকদের কাজের সুবিধার জন্য ইতিমধ্যে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কৃষকদের মাঝে ৭০টি গামবুট বিতরণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, জেলা প্রশাসনের সহায়তায় প্রত্যেক ওয়ার্ডে কৃষকদের মাঝে কাজের সুবিধার জন্য গামবুট দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ইউনিয়ন পরিষদের সভায় রাসেল ভাইপারের ব্যাপারে সবাইকে সতর্কতার সাথে চলাফেলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পদ্মা নদী অধ্যুষিত আরেকটি ইউনিয়ন সদরের ডিক্রিরচর। ডিক্রিরচর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান বর্তমানে ভারতে আছেন। ওই ইউনিয়নের উদ্যোক্তা মো. রাশেদ শেখের সাথে কথা হয় ইউপি চেয়ারম্যানে মুঠোফোনে। রাশেদ শেখ বলেন, ইউনিয়নের গোলডাঙ্গী এলাকায় একটি রাসেল ভাইপার পিটিয়ে মেরেছে এলাকাবাসী। বাদাম তুলতে গিয়ে কৃষকরা ওই সাপটি দেখতে পান। পদ্মা নদী বিধৌত ফরিদপুর সদরের আলীয়াবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম ওমর ফারুক বলেন, আগে রাসেল ভাইপার পদ্মা নদীর ওপাড়ে দেখা যেতো। এখন সাপ মূল ভুখন্ডেও দেখা যাচ্ছে। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক নেমে এসেছে। এলাকাবাসীকে সতর্কতার সাথে চলাফেরা করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও জেলার বিভিন্ন উপজেলায়ও এ সাপের দেখা মিলছে। ফরিদপুরের বিভাগী বন কর্মকর্তা গোলাম কুদ্দুস ভুইয়া বলেন, সাপ নিরিহ প্রাণী। তারা লোকচক্ষুর আড়ালে থাকতে পছন্দ করে। আক্রান্ত না হলে তারা সাধারণত দংশন করে না। জীব বৈচিত্র রক্ষায় প্রকৃতিতে সাপের গুরুত্ব অপরিসীম। তাই আমাদের উচিত হবে না সাপকে বিরক্ত করা কিংবা ধরতে যাওয়া।