টাঙ্গাইলে বিলুপ্তির পথে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প। আধুনিক জিনিসপত্রের ভিড়ে মাটির দাম বৃদ্ধিসহ নানা সংকটে এ শিল্প হারিয়ে যেতে বসেছে বলে জানান মৃৎশিল্পীরা। টাঙ্গাইলে আগে শীতের মৌসুমে যে ব্যস্ততা দেখা যেতো মৃৎশিল্পীদের। এখন আর সেই ব্যস্ততা নেই মৃৎশিল্পীদের। সারি সারি মাটির তৈজসপত্র এখন তেমন নজরে পড়ে না। মাটির জিনিসপত্রের চাহিদা আগের মত না থাকায় এর স্থান দখল করে নিয়েছে দস্তা, অ্যালুমিনিয়াম ও প্লাস্টিকের তৈজসপত্র। তাই আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যাওয়ার পথে ঐতিহ্যবাহী এই মৃৎশিল্প। মৃৎশিল্পী ললিতা রানী পাল বলেন, আগের মতো কাজ নেই। প্লাস্টিকের জিনিস বের হওয়ায় আমাগো জিনিস এখন আর চলে না। আমাদের সংসারও এখন আর চলে না। পহেলা বৈশাখসহ বিভিন্ন উৎসব-পার্বণে আমাদের কদর বাড়ে। তাছাড়া আমাদের হাতে কোনো কাজ থাকে না। আমরা কষ্ট আছি। জোৎস্না পাল বলেন, আমাগো আগের মতো মাটির কাজ নেই। যার কারণে সংসারও চলে না। আমাগো যদি সরকার অনুদান দিতো তাহলে চলতে পারতাম। তিনি আরও বলেন, উৎসবে আসলে কিছুটা মাটির জিনিসের টান থাকে। আর সারা বছর দইয়ের পাতিল ছাড়া মাটির তৈরি জিনিস বিক্রি হয় না। আমরা ভালো নেই। মমতা পাল বলেন, আগে শীতের সময় আমরা মাটির কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করতাম।ভোরে থেকে কাজ শুরু করতাম।প্লাস্টিকের জিনিস বের হওয়াতে আমাদের আগের মতো ব্যস্ততা নেই। এখন শুধু দইয়ের পাতিল, ছোটদের খেলনা আর টয়লেটের পাট বিক্রি করে কোনো রকম সংসার চলছে। উল্লেখ্য, মৃৎশিল্পীরা শুধুমাত্র নিজের পরিশ্রমের মাধ্যমে শুকনা খড়, লাকড়ি, মাটি, বালি ও পানির সাহায্যে তৈরি করতেন দধির পাত্র, পিঠাখোলা, ভাতের পাতিল, পাতিলের ঢাকনা, কড়াই, রসের হাড়ি, ধুপ জ্বালানি পাত্র, মুড়ির পাতিল, বাতি জ্বালানোর পাত্র, জলকান্দা শিশুদের জন্য বিভিন্ন রকমের মাটির তৈরি খেলনা।