
সোনারগাঁয়ে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের সৌন্দর্য্য বর্ধনের পাশাপাশি পর্যটকদের বাড়তি মনোরঞ্জনের জন্য নির্মাণ করা লেক এখন পানি শূণ্য। দীর্ঘদিন ধরে লেকটি খনন না করায় ও বৃষ্টি না হওয়ার কারনে প্রচন্ড খরতাপে দেখলে মনে হবে ফসলের মাঠ ফেটে চৌচিড় হয়ে গেছে। মুখ থুবড়ে ম্লান হয়ে পড়ে আছে সোন্দর্য্য বর্ধনের লেক। এমনই চিত্র দেখা গেছে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের লেকে। ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা যায়, লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে অবকাঠামো নির্মাণে ‘জাদুঘর ভবন সম্প্রসারণ এবং অন্যান্য ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ’ নামের একটি প্রকল্প হাতে নেয় সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪৭ কোটি ২৬ লাখ টাকা। ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুনে বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছিল এই প্রকল্প। এ প্রকল্পের একটি অংশ ছিলো ফাউন্ডেশনের সোন্দর্য্য বধর্নে লেক নির্মাণ ও সংস্কার করা। কিন্তু প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবার আগেই সৌন্দর্য্য বর্ধনে নির্মাণ করা লেকটি পানি শূন্য হয়ে পড়েছে। সরেজমিন ফাউন্ডেশনের ভিতরে গিয়ে দেখা যায়, লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের লেকের নৌকাগুলো শুকনো ডাঙ্গাতে পড়ে আছে। কয়েকটি নৌকা পুকুর আকৃতির স্থানে অর্ধেক ডাঙ্গা ও অর্ধেক পানিতে ভাসানো রয়েছে। ওই নৌকায় ওঠে পর্যটকরা তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ছবি তুলছেন। অনেকেই আবার লেকের মাঝে দিয়ে হাটাহাটি করছেন। চাঁদপুর থেকে ঘুরতে আসা ব্যবসায়ী আমিরুল ইসলাম বলেন, স্বপরিবারে অনেক দুর থেকে সোনারগাঁ জাদুঘরে ঘুরতে এসেছি। আমার ছেলে মেয়েরা বায়না ধরেছে নৌকা ভ্রমন করবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় লেকে পানি না থাকায় নৌকা গুলো ডাঙ্গায় জমা করে রাখা হয়েছে। এতে একদিকে যেমন পর্যটকরা হতাশ হচ্ছেন অপর দিকে জাদুঘরের সৌন্দর্য্য ম্লান হচ্ছে।অতিদ্রুত লেকটি খনন করে এর সৌন্দর্য্য ফিরিয়ে আনা উচিত বলে মনে করেন তিনি। কুমিল্লার বুড়িচং থেকে আসা পর্যটক মুরাদ হোসেন বলেন, সোনারগাঁয়ে ঘুরতে এসে অনেক কিছু দেখেছি। শেষ মূহুর্তে বাচ্চারা নৌকা চড়বে বলে বায়না ধরেছে সেজন্য লোক ও কারুশিল্প জাদুঘরে নিয়ে এসেছি। কিন্তু লেকে পানি না থাকায় নৌকা ভ্রমন বন্ধ রাখা হয়েছে। তাই বাচ্চাদের সঙ্গে ডাঙ্গার নৌকায় ওঠে মুঠোফোনে ছবি তুলেছি। লেকে নৌকা ভ্রমনের ইজারাদার মোঃ ফজলুল হক জানান, প্রায় চার মাস যাবৎ লেকে পানি শূণ্য। পানি না থাকায় নৌকা ভ্রমন বন্ধ রয়েছে। জুন থেকে জুন পর্যন্ত ১ বছর সময়ের জন্য ৪ লাখ ৮২ হাজার ২০০ টাকায় টেন্ডারের মাধ্যমে ইজারা নেওয়া হয়েছিল। এ বছর ২ লাখ টাকার উপর লোকসান হবে। তিনি আরও বলেন, আমরা ফাউন্ডেশনের কর্তৃপক্ষের নিকট কয়েকবার আবেদন করেছি কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। লেকের মধ্যে ছোট্ট একটি পুকুর রয়েছে সেখানে নৌকা ভ্রমনের অনুমতি চেয়েছিলাম কিন্তু কর্তৃপক্ষ নাকোচ করে দিয়েছে। ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক রবিউল ইসলাম বলেন, একটি প্রকল্পের মাধ্যমে ফাউন্ডেশনের ‘জাদুঘর ভবন সম্প্রসারণ এবং অন্যান্য ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ ও সৌন্দর্য্য বর্ধনে লেক খনন করা হয়েছিল। এবছর বৃষ্টি না হওয়ায় শুষ্ক মৌসুম হওয়ার কারনে লেকের পানি শুকিয়ে গেছে। প্রকল্পটির মেয়াদ ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত রয়েছে। ডিসেম্বরের পরে এই প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হলে নতুন করে টেন্ডারের মাধ্যমে লেকটি খনন করে সৌন্দর্য্য ফিরিয়ে আনা হবে। তিনি আরও বলেন, যেহেতু লেকে পানি শূণ্য তাই নৌকা ভ্রমন বন্ধ রয়েছে।