সাতক্ষীরা জেলার সদর উপজেলার বৈকারী ইউনিয়নে দাঁতভাঙ্গা এলাকায় ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় দাঁতভাঙ্গা মহা বিদ্যালয়। যার বর্তমান নাম “ বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি আদর্শ কলেজ” প্রতিষ্ঠালগ্নে এলাকার দানশীল ব্যক্তিরা কেউ জমি, কেউ নগদ অর্থ, কেউ শ্রম দিয়ে মহা বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তখনকার সময় থেকে অদ্যাবধি পর্যন্ত কয়েক হাজার শিক্ষার্থী এখান থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণ করে দেশ বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় চাকুরী করছে। কিন্তু এলাকার কিছু কুচক্রী মহল সুবিধাবাদী ব্যক্তি ও বর্তমান অধ্যক্ষ মোঃ জাহিরুল আলম অধ্যাক্ষ হিসাবে যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের পরিচয়ের নাম ভাঙ্গিয়ে শিক্ষক নিয়োগ সহ বিভিন্ন অযুহাতে উক্ত কলেজ থেকে প্রায় ৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন। বিভিন্ন অভিযোগ সূত্রে জানাগছে উক্ত মহা বিদ্যালয়ের বর্তমান অধ্যক্ষ ইতিপূবর্বে ঐ কলেজে জাল সনদ ও অবৈধ নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে ইংরেজি বিষয়ের প্রভাষক পদে চাকুরীতে যোগদান করেন। তার বিরুদ্ধে তৎকালীন সময়ে তথ্য জালিয়াতি, তথ্য গোপন সহ দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এরই মধ্যে নিজের নিয়োগ অবৈধ হলেও পরে তিনি উক্ত প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ পদ বাগিয়ে নেন। এবং বিভিন্ন দফায় প্রায় ৪০ জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে প্রায় ৪ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও কলেজের আওতায় বিভিন্ন ফলজ ও বনজ গাছ লীজ, বালু বিক্রয় সহ বিভিন্ন খাতে আরো অনেক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে যখন বৃক্ষরোপনে জোর আহ্বান জানিয়েছেন তখন এই অধ্যক্ষ শিবির নেতা, অত্য প্রতিষ্ঠানের ছোট ছোট গাছ কোন টেন্ডার ছাড়াই বিক্রয় করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এ ব্যাপারে উক্ত প্রতিষ্ঠানের কোন কর্মকর্তা, কর্মচারী বাধা কিংবা কইফিত চাইলে তার চাকুরী নিয়ে টান পড়ে। এই অধ্যক্ষ মোঃ জাহিরুল আলম বর্তমান সময়ে উক্ত প্রতিষ্ঠানকে নিজের গড়া আইনে পরিচালিত করার জন্য তৎপর হয়ে উঠেছেন। অত্র মহা বিদ্যালয়টি গত ২০২২ ইং সালে এমপিও হওয়ার পরে প্রতিষ্ঠাতা লগ্ন থেকে যে সব কর্মর্তা কর্মচারীবৃন্দ নিরলসভাবে এতদিন শ্রম দিয়ে গেছেন তাদেরকে এখন চাকুরীথেকে বিভিন্ন অযুহাত দেখিয়ে বাদ দিয়ে নতুন শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ দেওয়ার পায় তারা চালিয়ে যাচ্ছে। তেমনিই একজন ব্যক্তি মৃগীডাঙ্গা গ্রামে মৃত আব্দুল আহাদ গাজীর পুত্র আহম্মাদ আলী , তিনি জানান কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সময় আমি এম.এল.এস এস পদে যোগদান করি। যোগদানের সময় আমার পিতার এক বিঘা জমি বিক্রয় করে অত্র প্রতিষ্ঠানে উন্নয়ন কাজের জন্য কয়েক লক্ষ টাকা প্রদান করি। পরবর্তীতে অদ্যাবধি পর্যন্ত কলেজের উন্নয়নের জন্য কয়েক দফায় টাকা প্রদান করেছি এবং বিনা বেতনে এযাবৎকাল সঠিক ভাবে শ্রম দিয়ে যাচ্ছি। প্রতিষ্ঠানটি এমপিও ভুক্ত হওয়ার পরে আমার নাম শিক্ষক ডাটাবেজে নাম এসেছে। অধ্যক্ষ মোঃ জাহিরুল আলম বিগত ২০২২ সালে ২৮ শে জুলাই রূপালী ব্যাংকে সঞ্চয়ী হিসাব খোলার জন্য প্রত্যয়ন পত্র দেয়। তার পর আমি ব্যাংকে হিসাব খুলি। এখন বর্তমান অধ্যক্ষ আমি সহ আরও কয়েকজন নিরীহ শিক্ষক কর্মচারীদের বাদ দিতে বিভিন্ন ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমি তার হাত থেকে প্রতিকার পাওয়ার জন্য চলতি বছর সাতক্ষীরা সদর সহকারী জজ আদালতে দেওয়ানী ২২১/২৩ নং মোকদ্দমা দায়ে করি। মোকদ্দমাটি বর্তমানে বিচারাধীন রহিয়াছে। আমি ইতিপূর্বে উক্ত প্রতিষ্ঠানে পরিচালনাপর্ষদ, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের কাছে ধন্যা দিয়েও কোন প্রতিকার পায়নি। বর্তমান অধ্যক্ষ সহ তার বাহিনী আমি আদালতে মামলা দায়ের করার পর আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদের জীবন নাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। তেমনিই ঐ মহা বিদ্যালয়ের আরেকজন যুক্তিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক শাজাহান কবিরের সাথে ঠিক একই ধরনের আচরণ করেন এই অধ্যক্ষ। তিনিও কোন উপায় না পেয়ে চলতি বছর দূর্নীতিদমন কমিশন ঢাকা, বেন বেইজ অধিদপ্তর ঢাকা, শিক্ষা অধিদপ্তর, শিক্ষা মন্ত্রনালয় সহ ঐ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দাখিল করেছে। সেগুলোরও তদন্ত চলমান আছে। ভুক্তভোগী আরও জানায় আমি ও আমার আরও সহকর্মীদের বিরুদ্ধে যে অন্যায় আচরণগুলি হচ্ছে আমরা তার সুষ্ঠ তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা, শিক্ষা মন্ত্রী, জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় সংসদ সদস্য হস্তক্ষেপ কামনা করছি। আমরা যাহাতে চাকুরী ফিরে পেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে সুখে স্বাচ্ছন্দে থাকতে পারি ও দূর্নীতিবাজ অধ্যক্ষ মোঃ জাহিরুল আলম তার দূর্নীতির কঠোর শাস্তি পায় । এছাড়া আরো এলাকাবাসী জানায় সে কলেজ জীবনে জামাত শিবিরের প্রত্যক্ষ সহযোগী ছিল। প্রতি মাসে তিনি সংগঠনকে মজবুত করতে নিজে ও বিভিন্ন স্থান থেকে টাকার যোগান দিতেন এবং তার ভাই একজন নাশকতা মামলার আসামী। সেটা প্রশাসন তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে। প্রসঙ্গত উক্ত দাঁতভাঙ্গা মহাবিদ্যালয়ের বর্তমান সময়ে ২০০৪ সালে উক্ত মহাবিদ্যালয়টির পূনঃস্থাপিত নাম করণ করা হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি আদর্শ কলেজ। এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিরা দাবী করেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার নামের কলেজ পরিচালনা করছেন একজন জামাত শিবির নেতা। এব্যাপারে গত ২৮ মে ২০২৩ ইং তারিখ বেলা ২.০৬ মিনিটে মোইল ফোনে কথা হয় অধ্যক্ষ মোঃ জাহিরুল আলমের সাথে। তিনি বলেন প্রতিষ্ঠানের চার কোটি টাকা বানিজ্য সঠিক নয়। প্রতিষ্ঠানের গাছ ও বালু বিক্রয়ের বিষয়ে রেজুলেশন আছে। উক্ত বিষয়ে দেখতে চাইলে আপনারা কলেজে আসেন। কয়েকজন শিক্ষকের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন তারা প্রতিষ্ঠানে আসেন না। তারা আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে যে অভিযোগ ও মামলা করেছে সেগুলো সঠিক নয়। আমিও তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে জামাত শিবিরদের অর্থযোগানের কথা বলা হয়েছে সেটা আসলে সত্য নয়। আমাকে ফাঁসানোর জন্য করা হয়েছে।