মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলা লেছড়াগঞ্জ চরের দরিদ্র মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন বেপারী। বয়স পঁচাশি ছুঁই ছুঁই। স্বজন, সংসার বলতে কিছুই নেই তাঁর। নেই বসবাসের জন্য এক টুকরো জমি কিংবা ঘর। তাই লেছড়াগঞ্জ চরের সকল মানুষই তার আপনজন। মুক্তিযোদ্ধার ভাতার টাকায় নিজে চলেন, চালান তাঁর মতো অসহায় আরো কয়েকজন মানুষকে। দরিদ্র অসহায় মানুষের বিপদে সর্বস্ব নিয়ে এগিয়ে যান তিনি। অভাবগ্রস্ত কোন পরিবারের মুখে দু’মুঠো ভাতের ব্যবস্থা , এলাকার এতিম মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা, অসুস্থদের চিকিৎসাসহ সামাজিক কাজের মধ্যেই নিজের প্রশান্তি খুঁজে নিয়েছেন এই মুক্তিযোদ্ধা। লেছড়াগঞ্জ চরের মানবিক মানুষ হিসেবেই পরিচিত তিনি।চোখের সামনে কোন মানবিক বিপর্যয় দেখলেই ছুটে যান সেখানে। পরপর দুটি দুর্যোগে মুখোমুখি হলো দেশ। প্রথমে করোনাভাইরাস, পরে বন্যা। এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন বেপারী দেখেছেন চরের দরিদ্র মানুষের আর্তনাদ। তিনিও কষ্ট পেয়েছে। চেষ্টা করেছে অসহায় মানুষের জন্য কিছু করার। তিনি যে অসহায়। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে দেশের এই অবস্থা দেখে শুধু আফসোস করেছেন। অসহায় মানুষের কষ্ট দেখে সরকারের দেওয়া মুক্তিযোদ্ধার ভাতার টাকা দিয়ে সে সময় ৩৭১ টি পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছিলেন এই মুক্তিযোদ্ধা। বীর মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন ব্যাপারি বলেন, মানবিক কাজের মধ্যে অন্যরকম প্রশান্তি আছে। যখন কোনো আসহায় মানুষকে সাহায্যের মাধ্যমে তার মুখে হাসি ফোটাতে পারি তখন হৃদয়টা প্রশান্তিতে ভরে যায়। এ প্রশান্তি আর কোথাও পাইনা। তিনি আরও বলেন, মানবসেবার মধ্য দিয়ে সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি অর্জনই আমার মূল লক্ষ্য।