গাজীপুরের শ্রীপুরে শৌচাগার থেকে দুই সন্তানের জননী আমেনা খাতুন (২১) নামের এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। তবে গৃহবধূকে নির্যাতন করে হত্যার পর মরদেহ শৌচাগারের ভেতর ফেলে স্বামীসহ শাশুড়ি, দেবর ও মামি শাশুড়ি বাড়ী থেকে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত শনিবার (২৩ মার্চ) দুপুরের দিকে উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের চকপাড়া গ্রামের (সলিংমোড়) এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত গৃহবধূ আমেনা খাতুন চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার কুটিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এবং মাওনা ইউনিয়নের সলিংমোড় এলাকার আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী। স্বামী আনোয়ার হোসেন মাওনা ইউনিয়নের সলিংমোড় এলাকার মঞ্জুর আলীর ছেলে। তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রি। নিহতের মা মনোয়ারা বেগম তার মেয়েকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ করেন বলেন, বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্বামীসহ তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন মেয়েকে নির্যাতন করতো। তাদের অব্যাহত নির্যাতনে স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বার একাধিকবার সালিশ বৈঠক করেও কোন সুরাহা করতে পারেনি। শনিবার বেলা সোয়া ১১টায় মেয়ের মামি শাশুড়ি রেনু আক্তার ফোন করে জানায় আমেনা মারা গেছে। খবর পেয়ে মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে এসে দেখি কেউ নেই। ঘরের ভেতরে শৌচাগারে মেয়ের লাশ পড়ে আছে। তিনি আরও বলেন, আশপাশের লোকজনের কাছে শুনেছি শুক্রবার (২২ মার্চ) দিবাগত রাতে স্বামীসহ তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমার মেয়েকে অনেক নির্যাতন করে বাড়ির পাশে রাস্তায় ফেলে রাখে। প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় স্থানীয় আদম আলী তাকে রাস্তা থেকে তুলে এনে বাড়িতে দিয়ে গেলে আরেক দফায় মারধর করে হত্যা পর মরদেহ শৌচাগারে রেখে তারা পালিয়ে যায়। অভিযুক্তরা তাকে সব সময় নির্যাতন করতো। তারা আমার মেয়েকে খুন করে পাঁচ বছর বয়সী নাতি এবং দেড় বছর বয়সী নাতনিকে নিয়ে পালিয়েছে। পুলিশ জানায়, গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর থেকে গৃহবধূর স্বামী আনোয়ার হোসেন (২৫), শাশুড়ি আনোয়ারা বেগম (৫০), দেবর দেলোয়ার (২২) এবং মামি শাশুড়ি রেনু আক্তার (৩৮) পলাতক রয়েছেন। এ বিষয়ে শ্রীপুরের মাওনা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) মিন্টু মোল্লা বলেন, বসতঘরের শৌচাগারের ভেতর থেকে গৃহবধূ আমেনার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সুরতহাল করে মরদেহের থুতনির নিচে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক থাকায় রহস্য ও সন্দেহ রয়েছে। মরদেহ ময়না তদন্তের পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।