সম্প্রতি ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে সাংবাদিকতা করার দায়ে সাময়িক বহিষ্কার হওয়া ১০ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে ইউজিসিতে অবস্থানের ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)। একইসঙ্গে অবিলম্বে এ বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা চর্চার সুযোগ নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি দেয়া হবেও জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা। বুধবার (২০ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি সাংবাদিক সমিতির’ ব্যানারে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) সভাপতি ওমর ফারুক বলেন, ‘সাংবাদিকতা করার দায়ে সাময়িক বহিষ্কার করে যে অবিচার করা হয়েছে সে সম্পর্কে আমি একটু আগে ভিসিকে কল করেছিলাম। তিনি কল রিসিভ করেন নি। এই ধরনের অপরাধ কিছুতেই সহ্য করা যায়না। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবাদদাতা রয়েছে। সাংবাদিকতা করায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের ঘটনা আমি কখনোই শুনিনি। কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ধরণের অন্যায় কিছুতেই সহ্য করা হবেনা। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি নিকৃষ্ট কাজ করেছে। শামীম হায়দার পাটোয়ারী আপনি টকশোতে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলেন, আপনাকে সতর্ক করে দিতে চাই। আপনাকে অবিলম্বে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করতে হবে। ভিসি মহোদয়, আপনি বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নিন। নতুবা আপনাদের দুজনের অফিস নয়, বাড়িও ঘোরাও করা হবে। আপনাদের নগ্ন চেহারা তুলে ধরা হবে।’ ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন বলেন, ‘ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে অবশ্যই অনিয়ম হচ্ছে। এজন্য সাংবাদিকদের সাংবাদিকতা করতে দিচ্ছে না। ছাত্রদের অবশ্যই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করতে হবে, একইসঙ্গে তাদের সাংবাদিকতা করতে দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতার পরিবেশ নিশ্চিত করা না গেলে এর পরিণাম ভালো হবেনা।’ ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটির সভাপতি সৈয়দ শুকুর আলী শুভ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় কারো নিজের নিয়ম অনুযায়ী চলবে না। বিশ্ববিদ্যালয়কে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী চলতে হবে। মঞ্জুরি কমিশনের আইন অনুযায়ী চলতে হবে। ভিসি সাহেবের আইন অনুযায়ী চলবেনা। অন্যায়ভাবে কাউকে বহিষ্কার করা যাবে না, তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করতেই হবে। এটা মগের মুল্লুক নয়। আমি শামীম হায়দার পাটোয়ারীকে কল দিয়েছিলাম, তিনি আমার সঙ্গে মিথ্যাচার করেছেন। অবিলম্বে শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে তাদের মর্যাদা দিয়ে সাংবাদিকতা করার পূর্ণাঙ্গ সুযোগ দিতে হবে। না হলে আমরা আমাদের মতো করে ব্যবস্থা নেবো। আন্দোলন কিভাবে করতে হয় আর দাবি কিভাবে আদায় করতে হয় সেটা সাংবাদিক সমাজ জানে। ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমার কাছে অবাক লাগে যে ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির সভাপতি সৈয়দ শুকুর আলী শুভ আমার উপস্থিতিতে শামীম হায়দার পাটোয়ারীকে কল দেন। কিন্তু এরপরেও তার কানে পানি যায়নি। কাজটি তিনি ঠিক করেননি। আপনি যদি স্বল্প সময়ে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না করেন তাহলে আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা হয় নাকি ব্যবসা হয় সেটি সবার সামনে তুলে ধরতে বাধ্য হবো। তখন কিন্তু আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না, মুখ দেখাতে পারবেন না। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মুজতবা ধ্রুব বলেন, আন্দোলনের ট্রেনে আমরা উঠেছি, আপনারা ভয় পাবেন না। আন্দোলন শুরু হয়েছে, আমরা আপনাদের সাথে আছি, আপনারাও সাথে থাকবেন। এটার শেষ দেখে ছাড়বো। জয় আমাদের হবেই। মানববন্ধনে আরো বক্তব্য দেন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ সোহেলী চৌধুরী, কার্যনির্বাহী সদস্য সাজেদা হক, সাবেক সহ-সভাপতি মানিক লাল ঘোষ, ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ জামাল, সাবেক তথ্য প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক আবদুল হাই তুহিন, এডুকেশন রিপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অভিজিৎ ভট্টাচার্য, সাধারণ সম্পাদক আখতারুজ্জামানসহ আরো অনেকে।