পেঁয়াজ উৎপাদনে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলা হিসেবে পরিচিত ফরিদপুরের হালি পেয়াজ, এরই মধ্যে স্বল্প পরিসরে উঠতে শুরু করেছে। পেঁয়াজ চাষী ও সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন রমজানের প্রথম সপ্তাহেই পর্যাপ্ত পরিমান পেঁয়াজ বাজরে আসতে শুরু করবে, এতে রমজানে পেঁয়াজের মূল্য স্বাভাবিক থাকতে পারে বলে মনে করছেন তারা। এদিকে অধিক মূল্যের আশায় অনেকেই জমি থেকে অপরিপক্ক পেয়াজ তোলায় মোট উৎপাদন কমে যাওয়ার শংকা রয়েছে বলে বলেও দাবী চাষীদের। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় ফরিদপুর জেলার সালথা ও নগরকান্দা উপজেলায় সর্বাধিক পরিমানে হালি পেয়াজ উৎপাদন হয়। এছাড়াও বোয়ালমারী, আলফাডাঙ্গাসহ অন্যান্য উপজেলাতে ভালো মানের পেয়াজ উৎপাদিত হয়ে থাকে। কৃষি অফিসের তথ্য মতে, এবছর জেলায় ছত্রিশ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আবাদ হয়েছে লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে ছত্রিশ হাজার দুইশ হেক্টর জমিতে। যা থেকে প্রায় পাঁচ লক্ষ মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদিত হতে পারে। জেলার পেঁয়াজ চাষীদের দাবী, পেঁয়াজ উৎপাদনের সাথে সম্পৃক্ত বিভিন্ন ধরনের পন্য সামগ্রীর মূল্য বেড়ে গেছে, ফলে বেড়েছে পেঁয়াজের উৎপাদন মূল্য। তাই বর্তমানে বাজার মূল্য ভালো থাকায় এবং আগামীতে বাজার মূল্য কমে যাবার শংকায় অনেকেই জমি থেকে অপরিপক্ক পেঁয়াজ তুলতে শুরু করেছেন। মোট উৎপাদনে যার প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করেন তারা। চাষীদের দাবী এতদাঞ্চলে বিপুল পরিমান পেঁয়াজ উৎপাদিত হলেও সংরক্ষণের সু ব্যবস্থা না থাকায় প্রকৃত মূল্য থেকে বঞ্চিত হন এলাকার চাষীরা। সরকারীভাবে এরই মধ্যে কিছু সংরক্ষণাগার তৈরি করে দেয়া হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপর্যাপ্ত। তাই চাষীদের লাভবান করতে এতদাঞ্চলে আরো সংরক্ষণাগার নির্মাণের দাবী তাদের। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, মার্চের মাঝামাঝিতেই বাজারে আসবে ফরিদপুরের পেঁয়াজ। সরকার পেঁয়াজের মূল্য ৬৫ টাকা বেঁধে দেয়ায় কৃষকরা ক্ষতিতে পড়বেন না বলে কৃষি কর্মকর্তারা মনে করেন। ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ মো. রফিকুল ইসলাম জানান, কৃষকরা যাতে অপরিপক্ক পেঁয়াজ না উত্তোলন করেন সে লক্ষ্যে কাউন্সেলিং করা হচ্ছে। একই সাথে আগামীতে পেঁয়াজ সংরক্ষনের ঘরের সংখ্যা বাড়ানো প্রস্তাবনা দেয়া রয়েছে বলেও জানান তিনি।