নিজস্ব প্রতিবেদক
পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের ই-লার্নিং ও আধুনিক শিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণে আগামী ছয় মাসের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম (সিএইচটি) অঞ্চলের ১০০টি বিদ্যালয়ে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সংযোগ চালু করতে যাচ্ছে সরকার। আজ শুক্রবার পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা জানান, এ উদ্যোগ পাহাড়ি অঞ্চলের শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রযুক্তিনির্ভর এক নতুন যুগের সূচনা করবে। দুর্গম এলাকার শিক্ষার্থীরা অনলাইনে শহরের অভিজ্ঞ শিক্ষকদের পাঠ গ্রহণ করতে পারবে, যা শিক্ষার মানে সমতা নিশ্চিত করবে। তার মতে, এটি শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি দক্ষ করে তুলবে, যা ভবিষ্যতে উচ্চশিক্ষা ও কর্মজীবনে সহায়ক হবে। জাতিগত জনগোষ্ঠীর মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিতে সরকারের পরিকল্পনা সম্পর্কে সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, ‘আমাদের প্রধান লক্ষ্য পার্বত্য চট্টগ্রামে মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠা। সবসময় কোটা সুবিধা পাওয়া সম্ভব নয়, তাই প্রতিযোগিতার জন্য ভালো স্কুল-কলেজ গড়ে তুলতে হবে।’ তিনি আরও জানান, স্যাটেলাইটভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা চালুর পাশাপাশি উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে হোস্টেল নির্মাণের পরিকল্পনাও রয়েছে। এছাড়া পার্বত্য অঞ্চলে একটি প্রকৌশল কলেজ, একটি নার্সিং কলেজ, হোস্টেল, অনাথালয় এবং ছাত্রাবাস নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে তিন বছর মেয়াদি বাঁশ চাষ কর্মসূচি, পশুপালন ও মৎস্য প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা উপদেষ্টার ভাষায় ‘অঞ্চলের অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি’ হবে। বাঁশ উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়িয়ে পানি সংকট কমানো এবং পরিবেশ সংরক্ষণও এ পরিকল্পনার অংশ। তিনি আরও জানান, পার্বত্য চট্টগ্রামে কাজু বাদাম, কফি ও ভুট্টার চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসব উৎপাদন সারাদেশে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। কাপ্তাই হ্রদকে ‘সোনার খনি’ আখ্যা দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, এখান থেকে মাছ আহরণ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, সরকার পার্বত্য এলাকার উন্নয়নে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে, যার লক্ষ্য অর্থনৈতিক আত্মনির্ভরতা অর্জন ও সব সম্প্রদায়ের অধিকার সুরক্ষা নিশ্চিত করা। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা পাহাড়ি জনগণ আর পিছিয়ে থাকতে চাই না, দেশের মূল স্রোতের সঙ্গে একীভূত হতে চাই।’ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে উন্নয়ন কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে উন্নয়নের সব দুয়ার উন্মুক্ত করেছে। আমাদের সমাজ, ধর্ম ও রাষ্ট্রের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’ তিনি জানান, পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের জন্য উন্নত ক্রীড়া পরিবেশ গড়ে তুলতেও সরকার কাজ করে যাচ্ছে। সূত্র: বাসস
পার্বত্য চট্টগ্রামে স্টারলিংক ইন্টারনেট সেবা চালু করবে সরকার
