গোয়ালন্দে ধর্ষনের শিকার এক কুমারী মায়ের সন্তানের আকিকা দিলেন গোয়ালন্দ ঘাট থানার মানবিক ওসি আশিকুর রহমান। ইতি পূর্রে গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া যৌন্যপল্লীর যৌনকর্মীর মৃত্যুর পর জানাজা পড়িয়ে দাফনের ব্যবস্থা করা, পুলিশি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলে গিয়ে গাছতলায় ‘জনগণের দরবার’ বসিয়ে অফিস করা, ওসিকে ‘স্যার’ সম্বোধন না করা,ওসির রুমে বিনা অনুমতিতে প্রবেশের ব্যবস্থা করা, ঈদের দিন প্রথমবারের মতো গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া পতিতাপল্লীর যৌনকর্মীদের মধ্যে কোরবানির মাংস বিতরণ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন এই মানবিক ওসি।এবার ধর্ষণের শিকার হয়ে কুমারী মায়ের জন্ম দেওয়া শিশু সন্তানের ‘আকিকা’ অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নিয়ে আরো একটি নজির স্থাপন করলেন ওসি আশিকুর রহমান। বৃহস্পতিবার দুপুরে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি আশিকুর রহমার তার নিজ উদ্যোগে গোয়ালন্দ পৌরসভার আদর্শগ্রাম মহল্লায় ওই কুমারী মায়ের বাবার বাড়িতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আনুষ্ঠানিকভাবে তিন মাস বয়সী শিশু ছেলে আব্দুল্লাহ ওমরের আকিকার অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করেন। সেখানে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দলের নেতা, শিক্ষক, পুলিশ, সাংবাদিকসহ এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার শতাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেন। এ বিষয়ে স্থানীয় পৌর ৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. নাসির উদ্দিন রনি বলেন, গোয়ালন্দ ঘাট থানার বর্তমান ওসি একজন মানবিক হৃদয়ের মানুষ। একজন পুলিশ অফিসার এতটা মানবিক হতে ওসি আশিকুর রহমানকে না দেখলে বুঝতে পারতামনা, তার এমন মহৎ ও মানবিক উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই। গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশিকুর রহমান বলেন, মুজিববর্ষের অঙ্গীকার, পুলিশ হবে জনতার’- বাংলাদেশ পুলিশের এই স্লোগানকে বাস্তবে রূপ দিতে হলে পুলিশি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে হবে। এ জন্য দেশ ও দশের স্বার্থে পুলিশ-জনতার দূরত্ব কমিয়ে আনা খুব জরুরি- এই উপলব্ধি থেকেই ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে আমি মানবিকতার পথে হাঁটছি। ধর্ষণের শিকার ওই কুমারী মায়ের জন্ম দেওয়া সন্তানের আকিকা নিয়ে এলাকায় পক্ষে-বিপক্ষে নানা গুঞ্জন চলছিল। এমন পরিস্থিতিতে আমি অসহায় ওই পরিবারটির পাশে দাঁড়িয়েছি। এলাকার বিশিষ্টজনদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে সবার সহযোগিতায় আনুষ্ঠানিকভাবে ওই কুমারী মায়ের ছেলে সন্তানের আকিকা সম্পন্ন করেছি। উল্লেখ্য, গোয়ালন্দ পৌরসভার আদর্শগ্রাম মহল্লার মৃত নবু মন্ডলের কাঠমিস্ত্রি ছেলে দুই সন্তানের জনক ইয়াছিন মন্ডল (৩৪)। একই মহল্লার হতদরিদ্র এক রিকশাচালকের ১২ বছরের কন্যা পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। এক বছর আগে তাকে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে ইয়াছিন।এতে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর ওই ছাত্রী গত জুন মাসে এক পুত্র সন্তান প্রসব করে। এ ঘটনায় গোয়ালন্দ ঘাট থানায় দায়ের করা মামলায় ধর্ষক ইয়াছিন মন্ডল গ্রেপ্তার হয়ে এখন জেলহাজতে আছে।