গাজীপুরে মুক্তিপণের দাবীতে অপহরণের ১৩দিন পর বৃহষ্পতিবার রাতে এক কারখানার কর্মীকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করেছে র্যাব-১ এর সদস্যরা। এসময় অপহরণকারী ফল ব্যাবসায়ী দুইভাইকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের কাছ থেকে নেশা জাতীয় দ্রব্য ও মোবাইলসহ বিভিন্ন মালামাল জব্দ করা হয়েছে।
আটককৃতরা হলো- নারায়নগঞ্জের আড়াইহাজার থানার সুরবান্দি গ্রামের মোঃ লোকমান মোল্লার ছেলে শামীম মোল্লা (২২) ও রাজু মোল্লা (২০)। তারা গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের বাসন থানাধীন আউটপাড়া এলাকার আলমাছের বাড়ির ভাড়াটিয়া।
র্যাব-১’র স্পেশালাইজ কোম্পানী পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার লেঃ কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল-মামুন জানান, গত ১৫ আগস্ট সন্ধ্যায় নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁও এলাকার কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন মোঃ ইশতিয়াক (২০)। তিনি সেখানে কঙ্কা গ্রুপের ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল ইন্ডাষ্ট্রিয়াল নামের ইলেক্ট্রনিক ও ইলেক্ট্রিক সামগ্রী তৈরীর কারখানায় চাকুরী করেন। তিনি কালিয়াকৈর উপজেলার হাটুরিয়াচালার আমির আলী খানের ছেলে। দু’দিনের ছুটি কাটিয়ে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে তিনি কালিয়াকৈর বাস স্ট্যান্ড এলাকায় গাড়ীর জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এসময় ক’অপহরণকারী সেখানে গিয়ে কৌশলে তাকে নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন করায়। পরে অপহরণ করে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে আটক করে শারীরিক নির্যাতন করে এবং তার কাছে থাকা মোবাইল ও টাকা ছিনিয়ে নেয়। এসময় একশ’ টাকা মূল্যের ৩টি সাদা ষ্ট্যাম্পে ইশতিয়াকের স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। পরদিন অপহৃতকে খুন করে লাশ গুম করার হুমকি দিয়ে ইশতিয়াকের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তার পরিবারের কাছে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে অপহরণকারীরা।
র্যাব কর্মকর্তা আরো জানান, অপহৃতের সন্ধান না পেয়ে তাকে উদ্ধারের জন্য ইশতিয়াকের স্বজনরা গাজীপুরে র্যাব-১’র পোড়াবাড়ী ক্যাম্পে আবেদন করেন। এরপ্রেক্ষিতে র্যাব সদস্যরা বিভিন্নস্থানে অভিযান চালায়। অপহরণের ১৩দিন পর বৃহষ্পতিবার রাতে র্যাব-১’র সদস্যরা গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের আউটপাড়া এলাকা হতে ফল ব্যবসায়ী দুই ভাই শামীম ও রাজুকে আটক করে। পরে আটককৃতদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে অপহৃত ইশতিয়াককে চান্দনা চৌরাস্তা এলাকা থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এসময় আটককৃতদের কাছ থেকে অজ্ঞান কাজে ব্যবহৃত ৪টি মলম, অপহৃতের স্বাক্ষরিত তিনটি স্ট্যাম্পসহ ৪টি মোবাইল সেটসহ উদ্ধার করা হয়। এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
আটককৃতরা র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তারা পেশায় ফল ব্যবসায়ী। তারা দীর্ঘদিন যাবৎ গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া থেকে ফল ব্যবসার আড়ালে বিভিন্ন লোককে কৌশলে নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন করিয়ে অপহরণ ও মুক্তিপন আদায় করে আসছিল।