বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা চিরদিনের জন্যে মুছে ফেলার হীন উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর জাতীয় চার নেতাকে ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে মনে করেন বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের সভাপতি লায়ন গনি মিয়া বাবুল। আর অধ্যাপক নিম চন্দ্র ভৌমিক বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ও ৩ নভেম্বরের হত্যাকান্ড মূলত একইসূত্রে গাঁথা। বাঙালি জাতিকে নেতৃত্বশূন্য করতে এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে মুছে ফেলতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে মুক্তিযুদ্ধে পরাজিতরা নৃশংসভাবে হত্যা করে। জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের উদ্যোগে রাজধানীর পুরানা পল্টনে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মঙ্গলবার সকালে ‘জেল হত্যা দিবস ও জাতীয় চার নেতার অবদান’ শীর্ষক আলোচনাসভা ও শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে এসব কথা বলেন তারা।
বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুলের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাবেক রাষ্ট্রদূত অধ্যাপক নিম চন্দ্র ভৌমিক। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগের সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ জলিল ও বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদের সভাপতি জিন্নাত আলী খান জিন্নাহ। বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ নুরুল ইসলাম তালুকদারের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন মানিকগঞ্জ সাহিত্য পরিষদের সভাপতি কবি আজহারুল ইসলাম, বাকশাল এর মহাসচিব কাজী জহিরুল হক কাইয়ুম, কবি সংসদ বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ছড়াকার তৌহিদুল ইসলাম কনক, সাপ্তাহিক জনতার দলিল পত্রিকার সম্পাদক মোঃ দেলোয়ার হোসেন ভূইয়া, দৈনিক নবচেতনার মফস্বল সম্পাদক মিজান শাজাহান, সংগঠনের সদস্য নাসির উদ্দিন আহমেদ, মোঃ আনোয়ার হোসেন প্রমুখ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক নিম চন্দ্র ভৌমিক আরও বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম পরিচালক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু একনিষ্ট সহচর বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ, মন্ত্রীসভার সদস্য ক্যাপ্টেন এম মন্সুর আলী এবং এএইচএম কামরুজ্জামানকে কারাগারে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকাবস্থায় নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকান্ড বাংলাদেশের এক কলঙ্কিত অধ্যায়। তিনি ৩ নভেম্বর জেল হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করে বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী চক্র ও তাদের দোসররা বর্তমানেও সক্রিয় রয়েছে। স্বাধীনতা বিরোধীদের বিষয়ে সর্বদা সচেষ্ট থাকতে হবে। সভাপতির বক্তব্যে লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা চিরদিনের জন্যে মুছে ফেলতে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর জাতীয় চার নেতাকে ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। যা পৃথিবীর ইতিহাসে জঘন্য ও বর্বরোতি। তিনি বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার আদর্শ এবং গুণাবলি সকলের মধ্যে সঞ্চারিত ও প্রসারিত করার আহ্বান জানান। তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার আদর্শ ও স্বপ্ন ছিল অভিন্ন। তারা একটি সুখী সমৃদ্ধশালী অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল। তাদের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নিরলসভাবে কাজ করছেন। তিনি সকলকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে স্বীয় দায়িত্ব সততা ও সচ্ছতার সাথে পালন করার আহ্বান জানান। আলোচনা শেষে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ও ৩ নভেম্বরের শহীদদের আত্মার মাগফেরাত ও দেশ-জাতির সমৃদ্ধি কামনা করে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠি হয়। দোয়া মাহফিল পরিচালনা করেন জয়বাংলা মঞ্চের সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ নাফিয়ী।