দেশের ব্যবসা বাণিজ্যের লাইফ লাইন খ্যাত কর্ণফুলী নদীকে দূষণ ও অপদখলের হাত থেকে রক্ষা করে তার নান্দনিক রূপ ফিরিয়ে এনে অর্থনীতিতে আরও বেশি অবদান রাখার সুযোগ সৃষ্টির জন্য সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী। রোববার চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সম্মেলন কক্ষে কর্ণফুলী নদীর দূষণ রোধ, নাব্যতা বৃদ্ধি ও অবৈধ দখল রোধ কল্পে নদী সংশ্লিষ্ট স্টেক হোল্ডারদের মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। সভায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এসএম আবুল কালাম আজাদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের চবক অধিশাখার কর্মকর্তারা, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম ওয়াসা, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, পরিবেশ অধিদফতর ও বিআইডব্লিউটিএ’র প্রতিনিধি অংশ নেন। অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা তাদের নিজ নিজ সংস্থার কর্ণফুলী নদী সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি এবং বাস্তবায়নে সুফল সম্পর্কে সভায় অবহিত করেন। কর্ণফুলী নদীর নাব্যতা মূল চ্যানেলে বাড়লেও খালগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় এবং দূষণ ও অবৈধ দখল বেড়ে যাওয়ায় নৌসচিব উদ্বেগ জানান। তিনি প্রতিটি সংস্থাকে তাদের প্রকল্প গ্রহণ এবং বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নদীর দূষণ রোধ এবং অবৈধ দখল প্রতিরোধের জন্য সমন্বিতভাবে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের নির্দেশনা দেন।প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে কর্ণফুলী নদীর দূষণ রোধ, নাব্যতা বৃদ্ধি ও অবৈধ দখল রোধ কল্পে প্রণীত মাস্টারপ্ল্যান যথাসময়ে বাস্তবায়নের জন্য সংস্থাগুলোকে আরও উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। কর্ণফুলী নদীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্টেক হোল্ডার হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দরকে এ ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। অন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে নিয়মিত বৈঠকের মাধ্যমে সমন্বিতভাবে কর্ণফুলী নদী রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি সভায় আলোচিত হয়। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে কর্ণফুলী নদীর ভূমিকা অতুলনীয়। তাই ভবিষ্যতে এ নদীকে একদিকে দূষণ ও অবৈধ দখলের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে অপরদিকে নাব্যতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আরও বড় আকারের জাহাজ গমনাগমনের সুবিধা তৈরি করতে হবে। শহরের নাগরিক বর্জ্য এবং সুয়ারেজের মাধ্যমে যাতে নদী দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি না পায় এ জন্য নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধিসহ অন্যান্য প্রতিরোধমূলক কার্যব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সভায় মত প্রকাশ করা হয়।বন্দরের চিফ হাইড্রোগ্রাফার আরিফুর রহমান কর্ণফুলী নদীর চ্যানেল এবং বাকলিয়ার চর থেকে বন্দর অভিমুখ পর্যন্ত নগরের নকশার প্রকল্পের অগ্রগতি এবং ঘাটতি বিষয়ক একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন ।