কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) পরিচ্ছন্নতাকর্মীদেরকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এবং মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
বুধবার উত্তরা কমিউনিটি সেন্টারে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদেরকে ধন্যবাদ জানানো হয়।
অনুষ্ঠানের সভাপতি ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, এটি একটি ভিন্নধর্মী অনুষ্ঠান। এ ধরনের অনুষ্ঠান ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ইতিপূর্বে হয়নি। আমরা মনে করি আমাদের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা, মশক নিধন কর্মীরা এই করোনাভাইরাসের মধ্যেও জীবনবাজি রেখে তাদের দায়িত্ব পালন করছেন। এই শহরকে পরিষ্কার করছেন। আজ আমরা প্রত্যেকটি ওয়ার্ডের পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও মশক নিধন কর্মীদের সাথে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়েছি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান খেটে খাওয়া মানুষদের জন্য দেশ স্বাধীন করেছেন। তিনি বলেছেন, আমি খেটে খাওয়া মানুষদের সাথে সব সময় থাকতে চাই। বঙ্গবন্ধুর চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আজকে এই আয়োজন করা হয়েয়েছে।
আতিকুল ইসলাম আরো বলেন, আমি ২০১৯ সালে যখন মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলাম প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছেন, যে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা শহরকে পরিষ্কার রাখে, তাদের জন্য একটি ভালো বাসস্থান নির্মাণ করা প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার আলোকে গাবতলীতে ২২১ কোটি টাকা ব্যয়ে চারটি ১৫ তলা বিশিষ্ট আবাসিক ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। ফলে ৪৮৪টি পরিবারের বাসস্থান হবে। ২০২১ সালে এ সকল আবাসিক ভবনের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হবে। এ সকল ভবনের পাশাপাশি পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সন্তানদের জন্য স্কুল এবং উপসনালয় তৈরি করা হচ্ছে। জনগণের ভোটে আমরা নির্বাচিত হয়েছি জনগণের পাশে থাকবো, এটাই আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি সম্পর্কে মেয়র বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন নিজের পায়ে দাঁড়াতে। আগামী পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে রাজস্ব আদায়ের জন্য আমরা চিরুনি অভিযান শুরু করতে যাচ্ছি। হোল্ডিং ট্যাক্স এর পরিধি বাড়ানোর জন্য আমরা এ অভিযান পরিচালনা করব। অনেক বাড়ি হয়তো দশতলা কিন্তু হোল্ডিং ট্যাক্স দিচ্ছেন দোতলা পর্যন্ত। হোল্ডিং ট্যাক্স এর পরিমাণ বাড়বে না, তবে হোল্ডিং ট্যাক্স এর পরিধি বাড়ানো হবে। এছাড়া পহেলা অক্টোবর থেকে ঢাকা উত্তরে কোন ঝুলন্ত তার থাকবে না। এ জন্য বিশেষ অভিযান শুরু হবে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে উন্নত দেশে রূপান্তর করার স্বপ্ন দেখেছিলেন। বাংলার কৃষক, শ্রমিক, জনতা, মেহনতী মানুষ সবাই মিলেমিশে ভালো থাকবে, সুখে থাকবে শান্তিতে থাকবে এই স্বপ্ন দেখেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে সকল মানুষের জন্য কল্যাণকর রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য বহুমুখি পদক্ষেপ নিয়েছেন।
মন্ত্রী আরো বলেন, আজকের অনুষ্ঠানটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরিচ্ছন্নতাকর্মী সহ নিম্ন শ্রেণির-পেশার মানুষদেরকে মানুষ হিসেবে মনে করা হতো না। কিন্তু বঙ্গবন্ধু বললেন ওরাও মানুষ। ওদের মধ্যে আর আমার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। তাদেরও উন্নত জীবন, উন্নত স্বপ্ন দেখার অধিকার আছে। পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা আমাদের শহর পরিচ্ছন্ন রাখে, পরিবেশকে ভালো রাখে। আমরা রোগমুক্ত থাকবো আর সেই মানুষগুলো কষ্টে থাকবে এটা হতে পারে না।
অনুষ্ঠানে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শহীদ হওয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্য এবং অন্যান্য শহীদদের জন্য দোয়া মাহফিল ও গভীর শ্রদ্ধা এবং দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠান শেষে মন্ত্রী ও মেয়র পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও মশক নিধন কর্মীদের সাথে মধ্যাহ্নভোজে অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া অন্যান্যের মধ্যে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল হাই, সচিব রবীন্দ্রশ্রী বড়ুয়া, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এম সাইদুর রহমান, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান মামুন, ওয়ার্ড কাউন্সিলরগণ উপস্থিত ছিলেন।