ePaper

আধূনিক প্রযূক্তি ব্যবহারে পাবনায় বারোমাসি সবজি চাষ

শারিফা আলম শিমু,পাবনা

আধূনিক প্রযূক্তি পলিনেট হাউজের মাধ্যমে পাবনায় বারোমাসি সবজি চাষ করা হচ্ছে। রূপপুর পারমানু প্রকল্পে কর্মরত বিদেশীদের চাহিদাকে সামনে রেখে এখানে বিভিন্ন প্রজাতির সবজি আবাদ করা হয়। ফলে বাজার অপেক্ষা একটু বেশী দামে বিদেশীদের কাছে এ সব সবজি বাজারজাত করতে সক্ষম হয়েছে ব্যবসায়ীরা। এতে ব্যাপক লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছে কৃষক। কৃষি মন্ত্রনালয়ের অধীনে আধূনিক প্রযূক্তি সম্প্রসারনের মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প এই প্রযূক্তি বাস্তবায়ন করেছে। ফলে পাবনা ছাড়াও রাজশাহী বিভাগের আটটি জেলাতে এ প্রযূক্তি সম্প্রসারন করা হয়েছে। সে কারনে অতি বৃষ্টি বা অনা বৃষ্টিতেও এ বিভাগে প্রকল্পের মাধ্যমে উৎপাদিত সবজির বাজার ক্রয় ক্ষমতার ভেতরে রয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে কৃষকদের সাথে কথা বলে আরো জানা গেছে, তারা শুধু সবজি আবাদই করে না এসব দামী সবজির বীজও উৎপাদন করে থাকে। সে সকল বীজ তারা প্রকল্প বহির্ভুত কৃষকদের কাছে বিক্রি করে থাকে। এর মধ্যে লেটুস পাতা ও উদ্রোগ পাতা উল্লেখ যোগ্য। যেটা রাশিয়ানসহ বিদেশীদের প্রিয় খাবার বলে জানা গেছে। উদ্রোগ বীজ চার হাজার ও লেটুস বীজ পাচশত টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঈশ্বরীর বক্তারপুর গ্রামের চাষী বাদশা মিয়া পলিনেটের হাউজের মাধ্যমে সবজি উৎপাদন করছে। তিনি জানান,সারা বছর সবজি আবাদের ক্ষেত্রে এ প্রযূক্তি বিশেষ ভুমিকা পালন করে থাকে। বৈরী আবহাওয়ায় নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে উচ্চ মূল্যের ফসল আবাদে এ প্রযূক্তির বিকল্প নাই। তিনি দুই বছরে শুধু ক্যাপসিকাম নামক সবজি উৎপাদন করে ছয় লাখ টাকা লাভ করেছেন তিনি। এতে তার ব্যয় হয়েছিল দুই লাখ টাকা এবং প্রায় তিন লাখ টাকা খরচ করে অন্যান্য সবজি উৎপাদন করে লাভ করেছেন সাত লাখ টাকা। মহাদেব পুরের চাষী শাহীনুজ্জামান বলেন, এ প্রকল্প করে তিনি সত্তর হাজার টাকা ব্যয় করে লাভ করেছেন দুই লাখ টাকা। তিনি বলেন, পলিনেট হাউজে পাতা ও ফল জাতীয় সবজি আবাদের জন্য উত্তম। এখান থেকে গ্রীষ্ম কালীন পেয়াজের চারা উৎপাদনের জন্য বিশেষ উপযোগী। এ ব্যাপারে প্রকল্প পরিচালক ড. এস এম হাসানুজ্জামান বলেন, যে কোন আবহাওয়ার জন্য পলিনেট প্রযূক্তি অত্যান্ত কার্যকরী। এ প্রযূক্তিতে অতি ও অনা বৃষ্টিতে ফসলের কোন ক্ষতি হয়না। পলিনেটের মাধ্যমে ভেতরে থাকা ফসল আলে-বাতাস প্রয়োজনীয়মত পেলেও বৃষ্টি থেকে ফসলকে রক্ষা করে। পলিনেটের ভেতর পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফসলের যতটুকু পানি দরকার ততটুক দেয়া যাবে। কুয়াশা, ঝর্না, মুসলধারে পানি বা ঝিরিঝিরি বৃষ্টির মত পানি সরবরাহ করার ব্যবস্থা রয়েছে নেটের ভেতরেই। যার ফলে ফসলের প্রয়োজনমত পানি দিতে পারে কৃষক। এ পদ্ধতিতে পোকা-মাকরের আক্রমন কম থাকায় কীটনাশক ব্যবহারের প্রয়োজন পরে না বলে জানান তিনি। এ প্রযূক্তিতে আবাদের চাহিদা কৃষকের মধ্যে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *