১৬ বছরের ত্যাগের অন্তর্ভুক্তি চাইবে বিএনপি, তারা দাবি করছে যে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রে শুধু ৩৬ দিনের আন্দোলন নয়, বরং বিগত সময়ের আন্দোলন, ত্যাগ, নির্যাতন ও রাজপথের সংগ্রামের সকল ঘটনাও অন্তর্ভুক্ত হতে হবে। বিএনপি মনে করছে, এই ঘোষণাপত্র তাদের দীর্ঘকালীন সংগ্রাম ও রাজনৈতিক প্রতিরোধের ইতিহাসের অংশ হিসেবে প্রমাণিত হতে পারে।
গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র নিয়ে সংশয়
যদিও সরকারের উদ্যোগে একটি ঘোষণাপত্র তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, বিএনপি তাদের ১৬ বছরের সংগ্রামকে সম্মানিত করতে চায় এবং তাদের আওতায় একটি সামগ্রিক রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিষ্ঠা করার কথা বলছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, “এ ঘোষণাপত্রে আমাদের আন্দোলন, নির্যাতন, এবং সঙ্কটের অন্তর্ভুক্তি না থাকলে তা অসম্পূর্ণ হবে।”
এছাড়া, সরকার ঘোষণাপত্রটি এককভাবে তৈরি করলে তা রাজনৈতিক অঙ্গনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে, এমন মতামতও বিএনপির নেতাদের পক্ষ থেকে প্রকাশ করা হয়েছে। তাদের মতে, দেশের সকল রাজনৈতিক দলের সম্মতিতে এটি তৈরি হওয়া উচিত, যাতে তা জাতির বৃহত্তর স্বার্থে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
অন্যান্য দলের প্রতিক্রিয়া
এই ঘোষণাপত্র তৈরির প্রক্রিয়া নিয়ে বিএনপির মতামতের পাশাপাশি দেশের অন্যান্য রাজনৈতিক দলও তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতারা মনে করেন, সরকারের উচিত হবে জনগণের সংকট এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ার দিকে মনোযোগী হওয়া। সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, “এ ধরনের ঘোষণাপত্র তৈরির মাধ্যমে জাতীয় সংকটের সমাধান সম্ভব হবে না, বরং সরকারকে নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রস্তুত করতে হবে।”
সরকার ও ছাত্রদের ভূমিকা
সরকারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে জানানো হয়েছে যে, জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র তৈরি করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এদিকে, ছাত্রনেতারা শহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ কর্মসূচি পালন করেছেন, যা আরও রাজনৈতিক উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে।
এমন পরিস্থিতিতে, বিএনপি মনে করছে, সরকারের উদ্যোগ একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হলেও এটি সকল পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে গ্রহণযোগ্য হবে, এবং ছাত্রদের নেতৃত্বে ঘোষণাপত্র তৈরির ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলের ভূমিকা অপরিহার্য।
উপসংহার
১৬ বছরের ত্যাগের অন্তর্ভুক্তি চাইবে বিএনপি, এবং তারা বিশ্বাস করে যে, এই ঘোষণাপত্রের মধ্যে শুধুমাত্র গণ-অভ্যুত্থানের পটভূমি নয়, বরং দেশের রাজনৈতিক সংগ্রামের গভীরতর চিত্রও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সকল পক্ষের মতামত এবং রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে এটি তৈরি হলে তা দেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতি ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার এক অনন্য দৃষ্টান্ত হতে পারে।
আরও পড়ুন:
- নির্বাচনের আগে বিচার ও সংস্কার অপরিহার্য: জাতীয় ঐকমত্যে জোর দাবি
- তারেক রহমান নতুন বছরে দেশের রূপান্তরের একটি পর্বে পৌঁছানোর আশাবাদ
Share Now